বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ জেল অসমের রিকশাচালক দম্পতির!

বাংলায় কথা বলার অপরাধে দেড় বছর জেল খাটতে হলো পূর্ব দেশের অসমের রিকশাচালক দম্পতিকে। মা-বাবার সঙ্গে জেলেই দিন কাটাল তাঁদের দুই নাবালক সন্তানও। খবর তরুণ চক্রবর্তীর পাঠানো দৈনিক আজকালের ৪ জানুয়ারির সম্পাদকীয় পাতার। যদিও বছরের শুরুতেই মুক্তি মিলেছে তাঁদের। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল স্বীকৃতিও দিয়েছে তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে। অভিযোগ থেকে জানা যায়, অসমিয়া আধিপত্যবাদীদের দোসর সন্ত্রাসবাদী বিজেপি ইচ্ছা করেই বাঙালিদের নিকেশ করতে এই রিকশাচালক দম্পতিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়েছিল। অসমে বর্বর সন্ত্রাসী গণহত্যাকারী বিজেপি শাসনে জেলের ভেতর-থাকা ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্পে ৩০ জনেরও বেশি বাঙালি মারা গেছেন। এঁদের বেশির ভাগই হিন্দু।

গুয়াহাটিতে রিকশা চালাতেন নুর হোসেন। বাঙালি রিকশাওয়ালা এবং তাঁর বাংলায় কথা বলা দেখেই তাঁকে পাঠানো হয় বিনা পারিশ্রমিকের বর্বর অত্যাচারে কেন্দ্র ডিটেনশন ক্যাম্পে বা বন্দি শিবিরে। জেলে ভরা হয় তাঁর স্ত্রী সাহেরা বেগমকেও। ফলে তাঁরা বাধ্য হন ২ সন্তানকেও জেলে নিয়ে যেতে। অথচ নুরের ঠাকুর্দার নাম ১৯৫১-র এনআরসি তালিকায় ছিল। সাহেরার বাবার নামও ছিল সেখানে। তাঁরা দুজনই উদালগুড়ি জেলার লদং গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু বাঙালি। বাংলায় কথা বলেন। এটাই তাঁদের অপরাধ। সঙ্গে দারিদ্রও। আইনি লড়াইয়েও প্রথম দিকে পাশে পাননি কাউকে। পরে আইনজীবী আমন ওয়াদুদের চেষ্টায় ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তাঁরা পেলেন স্বীকৃতি।

সম্প্রতি এই অসহায় দম্পতি ছাড়া পেলেন জেল থেকে। রাজ্যের দেওয়া তথ্য, এখনও ৮২ জন বন্দি রয়েছেন বর্বর নরমাংসভোজী বিজেপি ও নরপিশাচ মোদীর ডিটেনশন ক্যাম্পে। আসামের সন্ত্রাসী অবৈধ সরকার অসমের ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮১০ জনকে বিদেশি বলে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। এনআরসি তালিকায় নাগরিকত্ব খোয়াতে চলেছেন বৈধ ১৯ লক্ষেরও বেশি সংগ্রামী মানুষ। তবে এই তালিকাও মানতে নারাজ পৈশাচিক সংগঠন বিজেপি। প্রদেশ বিজেপির পিশাচ জন্তুদের সভাপতি রঞ্জিত দাসের হুমকি, নতুন করে এনআরসি তালিকা প্রকাশ করা হবে। ফলে বাঙালিরা আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন।

আরো পড়ুন:  ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের উদ্যোগে মহান স্তালিনের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বিজেপি বাঙালি-বিদ্বেষী। সাফ কথা নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি (সিআরপিসিসি)-র নেতা সাধন পুরকায়স্থের। তাঁর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে। সিআরপিসিসি-র চেয়ারম্যান লেখক ও গবেষক তপোধীর ভট্টাচার্যের অভিযোগ, বাঙালি সংস্কৃতির বিরোধী এই হায়েনা হচ্ছে বিজেপি। বাঙালির সর্বনাশ করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। তাই বাঙালিকে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ে এই বর্বরেরা ভাগ করতে চায়। কিন্তু বাঙালি বাঙালিই। তাকে দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ে ভাগ করা যায় না।

1 thought on “বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ জেল অসমের রিকশাচালক দম্পতির!”

  1. ধন্যবাদ । খুব সুন্দর হয়েছে -পাতাটা । আর ভাল করুন সে আশাই রাখি ।

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!