গিদারী নদী (ইংরেজি: Gidari River) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। তবে নদীটি বাংলাদেশ ভারত যৌথ নদী কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তঃসীমান্ত নদী নয়। নদীটি বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার একটি নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ৫৮ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক গিদারী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২৯।[১]
প্রবাহ: নদীটি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অতঃপর নদীটি একই জেলার সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন অবধি প্রবাহিত হয়ে আন্তঃসীমান্ত নদী ধরলায় পতিত হয়েছে। মৌসুমি প্রকৃতির এ নদীতে বর্ষাকালে পূর্ণ মাত্রায় পানি প্রবাহিত হয়। এ সময় তীরবর্তী এলাকায় বন্যার পানি প্রবাহিত হয়। বর্ষায় ভাঙনপ্রবণতার কারণে নদীর প্রশস্ততা ক্রমশ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলেও পলির প্রভাবে নদীর তলদেশ দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির প্রবাহ পূর্বের তুলনায় হ্রাস পাচ্ছে। শুকনা সময়ে নদীর পুরোটাই শুকিয়ে যায়।[১]
অন্যান্য তথ্য: গিদারী নদী বন্যাপ্রবণ এবং এই নদীর অববাহিকায় বাংলাদেশে কোনো প্রকল্প নেই। এই নদীর বাংলাদেশ অংশে কোনো ব্যারাজ বা রেগুলেটর এবং কোনো বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। কিন্তু ভারতীয় অংশে বাঁধ রয়েছে। এই নদীটিতে জোয়ারভাটার প্রভাব নেই। এই নদীর তীরে বাংলাদেশে সাঁথিয়ার হাট, তমালতলা হাট, শিবগঞ্জ হাট ও সোনামুখী হাট অবস্থিত।[১]
ভারতের বাঁধ নির্মাণ: গিদারী নদীটি ধরলা বা সিংগিমারী নদীর শাখানদী। নদীটির উৎসমুখে ৬০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট উচ্চতার একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত যার মাধ্যমে ধরলা ও গিদারী নদীর পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমায় সিংগীমারী নদী হতে বাংলাদেশের গিদারী নদীর প্রবেশ মুখের ভাটিতে ভারত এ বাঁধ নির্মাণ করছে।
তথ্যসূত্র:
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১০৬-১০৭, ISBN 984-70120-0436-4.
২. স্টাফ রিপোর্টার, তারিখহীন, আর্কাইভ প্রিয়দেশ ডট কম, “এবার গিদারী নদীর প্রবেশ মুখে ভারতের বাঁধ”, সংগ্রহের তারিখ, ২৩ জুন, ২০১৮, লিংক http://www.priyodesh.com/archives/38963
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।