আলবিজিয়া হচ্ছে ফেবিয়াসি পরিবারের সপুষ্পক উদ্ভিদের গণ

গণ

আলবিজিয়া

গণের নাম: Albizia DuraZZ., Mag. Tosca. 3: 11 (1772). জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Fabales. পরিবার: Fabaceae.

ভূমিকা: আলবিজিয়া (Albizia) হচ্ছে ফেবিয়াসি পরিবারে সপুষ্পক উদ্ভিদের গণ। এই গণের প্রজাতিগুলো ভেষজ গুণ সম্পন্ন; গৃহস্থালিসহ বাণিজ্যিক কাজে লাগে। মোট আটটি প্রজাতি জন্মে বাংলাদেশে।

আলবিজিয়া গণের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য:

এই গণে বৃক্ষ, গুল্ম অথবা আরোহী, সচরাচর কন্টকিত, আরোহীর কন্টক জোড়বদ্ধ নয় এবং পত্রঝরা স্থানের নিকটে উত্থীত হয়। উপপত্র বর্তমান, তুরপুন আকার থেকে রৈখিক বা সন্ধিত, প্রায়শই আশুপাতী, কখনও কখনও বক্র কন্টকে রূপান্তরিত হয়। পাতা দ্বি-পক্ষল, স্পর্শের প্রতি সংবেদনশীল নয়। পত্রাক্ষ এবং পক্ষ অতিরিক্ত পুষ্পক মধু গ্রন্থিবিশিষ্ট। পত্রক প্রতিমুখ, অবৃন্তক বা সবৃন্তক।

পুষ্পমঞ্জরী মঞ্জরীদন্ডক শিরমঞ্জরী বা সমভূমঞ্জরী অথবা না কাক্ষিক না প্রান্তীয় বা কাক্ষিক যৌগিক মঞ্জরীতে একত্রিত। পুষ্পক মঞ্জরীপত্র ক্ষুদ্রাকার, রৈখিক-দীর্ঘায়ত অথবা অনুপস্থিত। পুষ্প ৫-গুণিতক, সচরাচর দ্বিরুপী। শির মঞ্জরীর প্রান্তীয় পুষ্পগুলো উভলিঙ্গ, কেন্দ্রীয় পুষ্প পুং এবং বর্ধিত ও সুস্পষ্ট মধুগ্রন্থিবিশিষ্ট। বৃতি যমক, প্রান্তস্পর্শী, কদাচিৎ নিম্নপ্রান্ত বৃত্তাকারে কর্তিত। দলমন্ডল যমক, প্রান্তস্পর্শী। পুংকেশর অসংখ্য, নিম্নপ্রান্ত সংযুক্ত হয়ে একটি নল গঠন করে, পরাগধানী উপবৃদ্ধি বিহীন। গর্ভাশয় একক, অবৃন্তক বা সবৃন্তক।

পড কাগজব থেকে চর্মবৎ, সোজা অথবা বক্র, চেপটা, বিদারী, কদাচিৎ আবিদারী। বীজগুলো সচরাচর পৃথক প্রকোষ্ঠে নয়, ভাল্বগুলোর বাইরের পৃষ্ঠ হলুদাভ বাদামী বা কালচে। অন্তস্তক প্রতিটি বীজের চারপাশে আবরণ গঠন করে না। বীজ বৃত্তাকার, উপবৃত্তাকার থেকে দীর্ঘায়ত, চেপটা, বীজত্বক শক্ত, প্লিন্ডরোগ্রাম বিশিষ্ট, পাখনা বিহীন, বীজোপাঙ্গ অনুপস্থিত, প্রণমুকুল বক্র, সস্য অনুপস্থিত, বীজপত্র বৃহদাকার।

আলবিজিয়া গণের উদ্ভিদের আবাসস্থল:

এই গণে মোট ১৬০ প্রজাতি আছে। তবে বাংলাদেশে ৮টি প্রজাতি জন্মে। এই কয়েকটি প্রজাতির জন্য পাহাড়ি অরণ্যে বা পত্রঝরা বনই উপযুক্ত স্থান। এছাড়া প্রতিষ্ঠান, উদ্যান, অফিস, রাস্তার পাশে, বাড়ির বাগানেও লাগানো যায়। গাছের বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।

আরো পড়ুন:  ফাইকাস হচ্ছে তুঁত পরিবারের একটি গণের নাম

উদ্ভিদসমূহের ব্যবহার:

এই গাছেগুলো থেকে জ্বালানীর কাঠ পাওয়া যায়। কয়েকটি গাছ থেকে আসবাব বা বাড়ি বানানোর কাঠ সংগ্রহ করা হয়।  এছাড়াও কিছু গাছের পাতা, মূল, বাকল দিয়ে ভেষজ চিকিৎসা করা হয়। যেমন গোলাপী শিরিষ (বৈজ্ঞানিক নাম: Albizia julibrissin), তেঁতুলে কড়ই, শিরিষ, কালা কড়ই, ঝুনঝুনা কড়ই শরীরের বিভিন্ন অসুখ সারাতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া  গগণ শিরিষ, মটর বা শিল কড়ই, চাকুয়া কড়ই বাণিজ্যিকভাবে নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের জন্মানো প্রতিটি প্রজাতিই পরিবেশসহ মানুষের জন্য উপকারী।

তথ্যসূত্র:

১. বি এম রিজিয়া খাতুন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৯ম, পৃষ্ঠা ১৫৮-১৬৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!