গাঁদা ফুল বাংলাদেশের একটি অতি পরিচিত ফুলের প্রজাতি এবং এর ঔষধি ব্যবহারও ব্যাপক। এই উদ্ভিদের সাধারণ বর্ণনা হলো; এটি বাংলাদেশের একটি অতি পরিচিত ফুলগাছ। দেশের প্রায় সবগুলি অফিসের ফুলের বাগানে এবং অধিকাংশ বাড়িতে এটি দেখা যায়। গাছটি বীরুৎ জাতীয় তবে ডালাপালা বিস্তার করে ছোট ঝোপের মতো হতে পারে। এর পাতা পক্ষর যৌগিক, বৃন্তযুক্ত, প্রতিমুখ। ফুল বা মঞ্জরী বেশ বড়, বৃন্তযুক্ত, গুচ্ছাকার, বহুপাপড়ি বিশিষ্ট, হলুদ বা লালচে হলুদ বর্ণের।
গাঁদাফুল উদ্ভিদের সাধারণ গুণাগুণ হচ্ছে কাটা, পোড়া, ক্ষত, চোখের রোগ, অর্শ প্রভৃতি রোগে বেশ উপকারী। গাঁদাফুল উদ্ভিদের ব্যবহার্য অংশ হলো পাতা এবং ফুল।
রোগ নিরাময়ে গাঁদাফুল:
১ এই উদ্ভিদের ব্যবহার হলো কোনো স্থানে কেটে গেলে গাঁদাফুলের পাতার রস অথবা পাতা বেটে কাটা স্থানে প্রলেপ দিলে তৎক্ষণাৎ রক্তপড়া বন্ধ হয়, বেদনা কমে যায় এবং কাটা অংশ তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে।
২ পাতার রস দ্বারা ঘা ধুইয়ে দিলে ঘা তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।
৩ এক তোলা মাখনের সাথে গেঁদাফুলের পাপড়ির এক তোলা রস মিশিয়ে কয়েকদিন খেলে অশ্বের রক্তঝরা বন্ধ হয়।
৪ এর রস রক্ত পরিষ্কার করার ক্ষমতাসম্পন্ন। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেকে এর পাতা হতে হোমিওপ্যাথির মাদার টিংচার ওষুধ প্রস্তুত করে থাকেন এবং একে ভুলবশত অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ক্যালেন্ডুলা নামে বাজারজাত করেন। অবশ্য এর গুণাগুণ ক্যালেণ্ডুলা উদ্ভিদের কাছাকাছি গুণসম্পন্ন।
গাঁদাফুল থেকে ঔষুধ প্রস্তুত প্রণালী:
নিম্নে পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাতি তৈরিতে গেঁদাফুল থেকে মাদার টিংচার ওষুধ প্রস্তুত করা যায়-
তাজা গাঁদা পাতার মণ্ড যাতে ১০০ গ্রাম শুষ্ক পদার্থ থাকে, এই মিশ্রণকে উপযুক্ত পাত্রে বন্ধ করে ঠাণ্ডা ও অন্ধকার কক্ষে ৭ থেকে ৮ দিন পরিমিত ও নিয়মিত আলোড়নের পর ফিল্টার করে নিলেই এক হাজার সি. সি. পরিমাণ মাদার টিংচার বা ১x পাওয়া যাবে। পাতা অপেক্ষা পাপড়ি থেকে প্রস্তুত করা ঔষধ অধিক গুণসম্পন্ন হয়ে থাকে। গাঁদাফুল প্রাপ্তিস্থান বাংলাদেশেরসহ সর্বত্র শীতকালীন দেশে।
তথ্যসূত্রঃ
১. মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী: ‘গাছ-গাছড়ায় হাজার গুণ ও লতাপাতায় রোগ মুক্তি, সত্যকথা প্রকাশ, বাংলাবাজার, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ২০০৯, পৃষ্ঠা, ১০১-১০২।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Forest and Kim Starr
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।