লবণ বা নুনের প্রকারভেদ ও খাওয়ার নানা উপকারিতা

লবণ সব রসের রাজা। শাস্ত্রে বলা হয়েছে রস ছয় রকমের- মধুর, অম্ল, লবণ, কটু, তিক্ত ও কষা। কিন্তু সব রসের কেন্দ্র হল লবণ। সেইজন্যে লবণকে ‘সবরস’ বলা হয়। লবণ বা নুন ছাড়া সমস্ত মশলা নিরর্থক। লবণ বা নুন হলো সব রসের রাজা। নুন খাওয়া শুরু হয়েছে সভ্যতার আদিযুগ থেকে। আগে নুনের জন্যে কত খণ্ডযুদ্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘকাল যদি নুন না খাওয়া হয় তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। নুন অস্থি মজবুত করে। সারা পৃথিবীতেই এখন সমুদ্রের জল থেকে তৈরি নুন বা সামুদ্রিক লবণ খাওয়া হয়। নুন অনেক রকমেরই পাওয়া যায় তার মধ্যে পাঁচ ধরনের নুন প্রধানত ব্যবহার করা হয়।

লবণের প্রকারভেদ

সৈন্ধব লবণ: খনিতে উৎপন্ন। এই লবণই সর্বশ্রেষ্ঠ। সোঞ্চর বা সৌবচ্চল লবণ (কালো লবণ) কালো রঙের এই নুনকে কালো লবণও বলা হয়। লবণ মিশ্রিত মাটি থেকে বের করা হয়।

সম্বর বা সুকস্তুরি বা সাম্ভর লবণ: রাজস্থানের সম্বর সরোবরের জল থেকে তৈরি করা হয়। করকচ বা সমুদ্রী লবণ: সমুদ্রের জল বা ফেনা থেকে এই লবণ তৈরি করা হয়। বিট লবণ: উত্তাপ দিয়ে তৈরি করা হরিতকী মেশানো সৈন্ধব লবণ।

আয়ুর্বেদীয় মত

আয়ুবেদে এই পাঁচ রকমের লবণকে পঞ্চ লবণ বলা হয়। এই পাঁচ ধরনের সহ আয়ুর্বেদে ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদ মতে সৈন্ধব লবণের আছে অনেক গুণ। এই লবণ ত্রিদোষ নাশক (কফ, বাত, পিত্তের দোষ নাশক)। এই নুন খিদে বাড়িয়ে দেয়, সহজে হজম হয় এবং অন্য খাবার হজম করায়, লঘু, স্নিগ্ধ, রুচি বৃদ্ধি করে, শরীর শীতল করে, বীর্য ও মৈথুনশক্তি বৃদ্ধি করে,কামত্তেজক, সূক্ষ্ম অনু অণুতে প্রবেশ করবার ক্ষমতা রাখে, চোখের পক্ষে ভালো, মলরোধ করে এবং হার্টের অসুখে উপকার করে। চরক সৈন্ধব লবণকে ‘লবণোত্তম’ বলেছেন।

আয়ুর্বেদ মতে, কালো নুন রেচক অথাৎ মলত্যাগ করায়, ক্ষারযুক্ত, খিদে বাড়িয়ে দেয়, অত্যধিক মল বেগ রোধ করে। জীবাণু, গ্যাস, উর্ধবত গুল, অরুচি নাশ করে। আয়ুর্বেদ মতে, বিট লবণ লঘু, উষ্ণ, রুচিকর, অগ্নিপ্রদীপক (খিদে বাড়িয়ে দেয়) এবং রুক্ষ। এই নুন শূল, বায়ু, ডায়বেটিস (মধুমেহ), গুল্ম (বাযয়ুগোলক বা পেটের টিউমার), অজীর্ণ, কফ ও দাহ (শরীর জ্বালা করা) নাশ করে।

আয়ুর্বেদ মতে, সান্তর লবণ বেশি ক্ষারযুক্ত, তীক্ষ্ণ, অগ্নিদীপক (খিদে বাড়িয়ে দেয়), পিত্তকারক, বাত হরণ করে, কফ নাশ করে, লঘু, অত্যুষ্ণ, মলত্যাগ করায় (ভেদ), সূক্ষ্ম বেশি ক্ষরণ করায় বা অতিরিক্ত ক্ষরণশীল (অভিষন্দী)। অর্শ, কফ, গ্যাস ও বায়ু নাশ করে। আমাদের প্রতিদিনের খাওয়ায় করক বা সামুদ্রিক লবণে মাটি ও অশুদ্ধি ও ময়লা মেশানো থাকে। সেইজন্যে প্যাকেটের পরিষ্কার নুন খাওয়া উচিত। অবশ্য দেখে নিতে হবে তাতে আয়োডিন ও আয়রন বা লোহ মেশানো আছে কিনা তা না হলে গলগণ্ড ইত্যাদি রোগ হয়ে।

পরিমিত পরিমাণে নুন খেলে তা অগ্নিপ্রদীপক (খিদে বাড়ায়) বল বৃদ্ধি করে, মল পরিষ্কার করে, রক্তসংশোধক, ধাতুবধক, দুর্গন্ধহরণ করে, অজীর্ণ, উদরকৃমি, আমবৃদ্ধি কফ ও বিকৃত বায়ু নাশ করে। লবণ শূলনাশক, বাতনাশক, রুচি বৃদ্ধি করে, ক্ষারযুক্ত কিন্তু জ্বালা করায় না,  অত্যন্ত গরম বা ঠাণ্ডাও নয়। নুন মধুর, পাকে তীক্ষ যুক্ত মধুর, স্বাদুও ভারী। কফ নাশক হলেও মতান্তরে কফকারক। মাথার চুল তাড়াতাড়ি পাকিয়ে দেয়।

আয়ুর্বেদ মতে, লবণ পাচক, আগ্নেয়, রুচিকর, ছেদক, ভেদক, স্নিগ্ধ, উষ্ণ, গুরু, তীক্ষ, সারক, বাহর, দেহের স্তম্ভন, বদ্ধতা ও কাঠিন্য নাশক, শিরাদি মার্গের শোষণকারী । কফ ও পিত্ত বৃদ্ধি করে, বায়ুনাশ করে, শুক্র ও দৃষ্টির পক্ষে ক্ষতিকর। বেশি খেলে দেহে শিথিলতা ও মৃদূতা আসে।

আধুনিক ধারণা

আধুনিক মতে, লবণ রক্তের ও শরীরের তরল রসের ঘন হয়ে যাওয়া বা দানা বাঁধা রোধ করে সেগুলিকে তরল বা দ্রবণীয় অবস্থায় রাখে। ব্রেনে ও স্নায়ুতে বেশি জলীয় বা তরল পদার্থ জমা হতে দেয় না। শরীরের যে সব পদার্থের ওপর জীবনীশক্তি নির্ভর করে সেই সব নানা রকমের রস নিঃসরণ করে। তবে প্রয়োজনের বেশি নুন খাওয়া উচিত নয়।

অনেকে মনে করেন নুন বেশি খেলে হজম তাড়াতাড়ি হয়, খাবার ভালোভাবে হজম হয় এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। প্রয়োজনের বেশি নুন খেলে অন্ত্রের শ্লৈষ্মিকতার (পেছনে বা পিছলানো)ক্ষতি হয় এবং অতিরিক্ত ক্ষরজ পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্যে যে সব ছিদ্র, অবয়ব বা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে ক্ষার বেরিয়ে যাচ্ছে সেগুলিরও ক্ষতি হয়। নুন যদি সঠিক মাত্রায় খাওয়া হয় তাহলে তা জীবানপ্রদ কিন্তু যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে তা বিষতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।

বেশির ভাগ মানুষই নুন বেশি খান। আমাদের রান্নায় নুন তত থাকেই তার ওপরেও আলাদা করে নুন নিয়ে খান। এইভাবে ধীরে ধীরে শরীরের নুনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এর পরিণাম অত্যন্ত ক্ষতিকর।

অনেকদিন ধরে বেশি নুন দেওয়া খাবার খেয়ে থাকলে মাঝে মাঝে খাদ্যদ্রব্যে একেবারে নুন বাদ দিলে ভাল হয়। এইভাবে মাঝে মাঝে ‘লবণ উপসম’ করলে শরীরের অনেক উপকার হয়। শোথ (শরীর ফুলে ওঠা), বেরিবেরি, অর্শ, হাঁপানি, রক্তের চাপ (ব্লাড প্রেসার) প্রভৃতি অসুখে নুন খাওয়া বারণ বা খুবই অল্প পরিমাণে খাওয়া চলতে পারে। তরকারি, ডাল ইত্যাদি কম নুন দিয়ে রান্না করতে হয় এবং পাতে আলাদা করে নুন খাওয়া একেবারেই অনুচিত।

শরীরের প্রয়োজনের বেশি নুন অনেকদিন ধরে খেতে থাকলে তা শরীরের বিভিন্ন সন্ধিতে (জয়েন্টে) জমা হয়ে হয়ে প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ বয়েসে শরীরে অনেক রকম অসুখের সৃষ্টি করে। শরীরে নানা রকম গ্লানি দেখা দেয়। সময়ের আগেই চামড়া শিথিল হয়ে যায় বা ঝুলে পড়ে, চুল পেকে যায়, টাক পড়ে, স্বায়ুদৌর্বল্য হয়, চোখ খারাপ হয়ে যায়, বাত হয়। চর্মরোগ, মূত্রস্থলীর বিশৃঙ্কলা প্রভৃতি অসুখ ও অসুবিধে দেখা দেয়। সেইজন্যে বয়েস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ায় নুনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া উচিত। এতে অনেক অসুখের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে।

খাওয়া-দাওয়ায় নুনের গুণ ও প্রয়োগ:

১. হজমে বৃদ্ধি: নুন শরীরে যে সব রস খাবার হজম করায় সেগুলোর কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে খাবার হজম করতে সাহায্য করে।  নুনের সাহায্যে অস্থিগঠন বা হাড় তৈরি, খাবার হজম, সাধন ইত্যাদি সব কাজ ঠিক মতো হয়। খাওয়ার সঙ্গে নুন খেলে মুখের লালা বেশি বের হয়, সেইজন্যে খাবার হজম হয় তাড়াতাড়ি।

২. রক্ত পরিষ্কার রাখে: নুনে আছে রক্তপরিষ্কার করবার গুণ। শরীরের নানা রকম পাচকরসে যে নুন আছে এবং রক্ত ও পিত সোডাক্ষার আছে তা নুন থেকেই পাওয়া যায়- শরীর ধারণ ও শরীর বৃদ্ধির  জন্যে অন্য কোনও উপাদান নুনের স্থান নিতে পারে না।

৩. স্নান বা গোসলে উপকার: স্নানের জলে আধ চা চামচ থেকে আরম্ভ করে ক্রমশ এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে স্নান করলে সমুদ্র স্নানের উপকার পাওয়া যায়।

৪. বুকের জ্বালা করে: খাওয়ার আগে অর্ধ চামচ নুন মিশিয়ে এক গ্লাস জল পান করলে বুক জ্বালা ও অম্বল সারে।

৫. ক্ষত সারাতে: বিষাক্ত পোকার কামড়ে, হাত পুড়ে যাওয়ায়, ক্ষতে ও রক্তপাতে নুন লাগালে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। ঘা থেকে বা ক্ষত থেকে রক্ত বের হলে তার ওপরে নুন জলে ভেজানো ব্যান্ডেজ বা পটি বাঁধলে ক্ষত পেকে যায় আর শীঘ্রই শুকিয়ে যায়।  নুন জীবাণুনাশক ও দুর্গন্ধহর। ঘা ইত্যাদি ধুতে সেই জন্যেই নুন জল ব্যবহার করা উচিত।

৬. ত্বকের যত্নে: চোখ, চুল ও মুখের রোগে এবং হাত-পা ফাটলে লবণ জলের প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

৭. গলার সমস্যা দূর করতে: নুন জলে কুল্লি করলে গলার অসুখ যেমন গলা ব্যথা, ফ্যারিনজাইটিস, কাশি ইত্যাদি ও গলা ফোলা সারে।

৮. শুকনা কাশি দূর করতে: শুকনা কাশিতে যখন খুব কষ্ট হয় রাত্তিরে শোয়ার মুশকিল হয়ে যায় মুখে এক টুকরা নুন রাখলে কাশি কমে যায় এবং ঘুম আসে। বুকে যদি কাশি শুকিয়ে বসে যায় এবং বার বার কাশি আসে, রোগী অস্থির হয়, আর তিন-চার মিনিট পর পর পাতলা কফ বের হয় এই ধরনের কাশি কমাবার জমা কফ বের করবার জন্যে বুকে সর্ষের তেল লাগিয়ে নুনের পটলি গরম করে সেঁকে দিলে খুব উপকার পাওয়া যায়।

৯. কফ ও পিত্ত সারাতে: গরম জলে বেশি নুন মিশিয়ে খেলে বমি হয়ে গিয়ে কফ ও পিত্ত বেরিয়ে যায়।

১০. পেট থেকে বিষ বের করতে: কোনো কারণে পেটে বিষ চলে গেলে শরীরের প্রকৃতি অনুসারে ১ চা চামচ থেকে এক চতুর্থাংশ থেকে হাপ চা চামচ পরিমানে জল খাইয়ে বমি করলে বিষ বেরিয়ে যায়।  কিংবা ১৫/২০ মিনিট পরে যায় মলাবেগ আসে এবং মলের সঙ্গে বিষ বেরিয়ে যায়।

১১. ব্যথা কমায়: জোয়ান আর নুন একসঙ্গে মিশিয়ে পিষে নিয়ে খেলে পেটের শল (ব্যথা) সারে। নুন আর হলুদ জলে মিহি করে পিষে নিয়ে প্রলেপ লাগালে মচকানির ব্যথা ও ফোলা কমে যায়।

১২. বাত জ্বর সারাতে: আদার রস, লেবুর রস ও নুন মিশিয়ে সকাল, সন্ধ্যা খেলে। বদহজমের বা বাতগুল্মের জন্যে যে ব্যথা তা সারে, বায়ুশুদ্ধি হয় আর পাচন ক্রিয়া (হজম) ভাল হয়।

১৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: শোয়ার আগে কুনকুনে গরম জলে নুন মিশিয়ে খেলে অস্ত্র পরিষ্কার হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শৌচশুদ্ধি হয়। পুরোনো কোষ্ঠকাঠিন্যও সেরে যায়।

১৪. কৃমিনাশ করে: সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুদিন ধরে নুন মেশানো জল খেলে। পেটের ভেতরের ছোট ছোট কৃমি বেরিয়ে যায়, নতুন কৃমি জন্মায় না, পাচন ক্রিয়া (হজম) ভাল হয়।  শরীরে নুনের অভাব হলে নানা অসুখ এমনকী কৃমি পর্যন্ত হতে পারে।

১৫. প্রসাবের সমস্যা দূর করতে: যদি প্রস্রাব ঠিক মতো না হয় এবং অপরিষ্কার হয় তাহলে জলের মধ্যে খানিকটা নুন মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে মূত্রাবোধ বা প্রস্রাব আটকে যাওয়া ঠিক হয়ে যায় এবং প্রস্রাব পরিষ্কার হয় বা মূত্রশুদ্ধি হয়। 

১৬. হার্নিয়ায় (অণ্ডবৃদ্ধি): সৈন্ধব লবণ গুঁড়া করে গাওয়া ঘিয়ে মিশিয়ে সাত দিন খেলে হার্নিয়ায় (অণ্ডবৃদ্ধি) উপকার হয়।

১৭. দাঁতের সমস্যা সারাতে: দাঁতের ব্যথা হলে মাড়ি ফুলে গেলে নুন জলে কুলি করলে আরাম পাওয়া যায়।  মিহি নুন আর সর্ষের তেল মিশিয়ে দাঁত মাজলে পাইয়োরিয়ায় উপকার হয়।  নুনের পুটলি তৈরি করে সেঁক দিলে দাঁতের ব্যথা গাল ফুলে ওঠা ইত্যাদিতে আরাম পাওয়া যায়।

১৮. পতঙ্গের কামড়ে: মৌমাছি কামড় দিলে সেই স্থানে কিছুক্ষণ পরপর নুন জল দিয়ে ধুয়ে দিলে জ্বালা কমে ও বিষ নেমে যায়। বিছের কামড়ে নুন ঘষলেও আরাম পাওয়া যায় ।

১৯. বিভিন্ন প্রকার জ্বর সারাতে: নুন শুকনা তাওয়ায় লাল হওয়া পর্যন্ত সেঁকে নিয়ে কনকনে গরম জলে মিশিয়ে খেলে (অল্প পরিমাণে) বদহজম, উদরবাত, আমজ্বর, কফজ্বর আর বিষমজ্বর (ঠাণ্ডা লেগে যে জ্বর) উপকার হয়।

২০. বিবিধ: নুনের সঙ্গে গোলমরিচ পিষে খেলে বমি বন্ধ হয়।  জলে নুন মিশিয়ে ফুটিয়ে খেলে ম্যালেরিয়া ও জ্বর সারে । যখন চারদিকে কলেরা হচ্ছে তখন খাবারের সঙ্গে নুন বেশি খেলে কলেরা হয় না।

ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা

১. নুন বেশি খেলে পাচনক্রিয়া, রক্ত, মাংস, মেদ প্রভৃতি ধাতু এবং বাতনাড়ির ক্ষতি হয়।

২. বেশি নুন খেলে পাকস্থলীর জ্বালা এবং অন্যান্য জ্বালা বেড়ে যায়।

৩. অনেক দিন ধরে বেশি নুন খেলে চর্মরোগ, রক্তবিকার, শুক্রক্ষয়, সন্ধিতে (জয়েন্টে) ব্যথা, মাথা ব্যথা, মুত্ররোগে প্রভৃতি অসুখ করে।

৪. যাঁদের শরীর ফুলে যাওয়া রোগ আছে, হাম বসন্ত ইত্যাদিতে যাঁরা  ভুগছেন, চুলকুনি, ইত্যাদি ত্বকের অসুখ আছে, কুষ্ঠ ব্যাধিতে, রক্তবিকারের রোগীদের নুন খাওয়া প্রায় ত্যাগ করাই ভাল।

৫. বেশি পরিষ্কৃত প্যাকেটের বা দুধের মত ধবধবে সাদা রিফাইনড় নুন খাওয়ার ফলে গলগণ্ড ইত্যাদি রোগ হয় সেইজন্যে আজকাল রিফাইনড বা নুনের প্যাকেটে নুনের সঙ্গে আয়োডিন ও আয়রন (লোহা) মেশানো হয়। প্যাকেটের নুন কেনবার সময় বিশেষভাবে দেখে নেওয়া দরকার তাতে আয়োডিন মেশানো আছে কিনা। কারণ নুন সাদা হলেই যে তা শরীরের পক্ষে ভাল এ ধারণা ঠিক নয়।

তথ্যসূত্রঃ

১. সাধনা মুখোপাধ্যায়: সুস্থ থাকতে খাওয়া দাওয়ায় শাকসবজি মশলাপাতি, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, নতুন সংস্করণ ২০০৯-২০১০, পৃষ্ঠা,১৮১-১৮৬।

Leave a Comment

error: Content is protected !!