নোনা শ্রমিক

প্রতিদিন সকালে জানালার পাশে
চঞ্চল বালক এক
বাড়িয়ে দিয়ে হাত বলত
দিদি, এটা কি?
না! সেদিন ফুল, বেল বা ফড়িং নয়
এনেছিলো এক মুঠো নুন।

সকালের সূর্যের প্রথম দীপ্ত কিরণ
এসে পড়ে নুনের উপর,
এক উজ্জ্বল প্রভার বিকিরণ
আমাকে শোনায় দূরের গর্জন।

এক মুঠো নুনে আমি শুনতে পাই
ঢেউয়ের আঁছড়ে পড়া সেই সব ধ্বনি,
যার কলতানে নেচে ওঠে প্রকৃতির কড়া;
আমায় মনে করিয়ে দেয় নুন শ্রমিকের কথা
যারা লড়ে যায় নোনা ফেনার সাগরে।
সূর্যের প্রখরতা বাড়ায় জীবনের কর্ম বেগ
সকল অনুভূতি চুয়ে পড়ে নুনস্তুপে,
ক্লান্তি, ক্ষয়, হতাশা, অক্ষমতা
তলিয়ে পড়ে স্তুপসারিতে।

ঢেউয়ের সাথে ভেসে চলে আশা;
পড়ন্ত বিকালে শ্রমিকের সোনালি স্বপ্নগুলো
সাগরের উপর শীতল হাওয়ায় করে বিচরণ,
জীবনের শক্তিগুলো বেঁচে থাকে এখানেই—
সাগর, শ্রমিক আর নুনের চারপাশে।

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩
আকুয়া, জুবিলী কোয়ার্টার, ময়মনসিংহ

চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি ভিনসেন্ট ভ্যান গগ (৩০ মার্চ ১৮৫৩ – ২৯ জুলাই ১৮৯০) আঁকা চিত্র স্নানরত নৌকা (Bathing boat on the Seine at Asnieres)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন মার্চ ১৮৮৭ সালে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কবিতাটি আমার [দোলন প্রভা] রচিত মনন পাবলিকেশন ঢাকা থেকে ২০১৭ সালে প্রকাশিত স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে  কবিতাগ্রন্থের ২৩ পৃষ্ঠা থেকে নেয়া হয়েছে এবং রোদ্দুরেতে প্রকাশ করা হলো।

আরো পড়ুন:  নুতন বছরে

Leave a Comment

error: Content is protected !!