[otw_shortcode_info_box border_type=”bordered” border_color_class=”otw-red-border” border_style=”bordered” shadow=”shadow-inner” rounded_corners=”rounded-10″]দ্বিপদ নাম: Asarcornis scutulata, (S. Müller, 1842) সমনাম: Anas scutulata Müller, 1842, Cairina scutulata (Müller, 1842) বাংলা নাম: বাদি হাঁস ইংরেজি নাম: White-winged Duck (White-winged Wood Duck) জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্যKingdom: Animalia বিভাগ/Phylum: Chordata শ্রেণী/Class: Aves পরিবার/Family: Anatidae গণ/Genus: Asarcornis প্রজাতি/Species: Asarcornis scutulata, (S. Müller, 1842)[/otw_shortcode_info_box]
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় Asarcornis গণে ১টি প্রজাতি রয়েছে এবং পৃথিবীতে রয়েছে ১টি প্রজাতি রয়েছে। বাংলাদেশ ও পৃথিবীর প্রজাতিটি হচ্ছে ১. বাদি হাঁস।
বর্ণনা: বাদি হাঁস বিশালদেহী হলদে-চোখ হাঁস (দৈর্ঘ্য ৭৩.৫ সেমি, ওজন ৩ কেজি, ডানা ২০.৫ সেমি, ঠোঁট ৬ সেমি, পা ৫.৭ সেমি, লেজ ১৫ সেমি)। পুরুষপাখির চেহারা ও আকার স্ত্রী থেকে কিছুটা আলাদা। পুরুষপাখির ডানায় কাঁধ বরাবর কোভার্টে সাদা পট্টি; সাদা মাথা ও ঘাড়ে কালো ছোট দাগ; পিঠের বাকি অংশ কালচে ও তামাটে বাদামি মেশানো পালকে ঢাকা; ও চোখ কমলা-হলুদ। স্ত্রীহাঁস আকারে ছোট ও অনুজ্জ্বল পালকের জন্য পুরুষপাখি থেকে দেখতে আলাদা; মাথায় বেশ ঘন কালো দাগ রয়েছে। পুরুষ ও স্ত্রীহাঁস উভয়ের চোখ বাদামি; ঠোঁট কমলা রঙের, উপরে কালো চিতি; এবং পা ও পায়ের পাতা কমলা হলুদে মেশানো।
স্বভাব: বাদি হাঁস গ্রীষ্মমন্ডলীয় পাহাড়ি বনের বদ্ধ জলে এবং ধীরগতির স্রোতধারায় বিচরণ করে; সাধারণত জোড়ায় বা ৫-৬টির দলে দেখা যায়। এরা গাছে ঢাকা জঙ্গলের জলাশয়ে রাতে সাঁতার দিয়ে অথবা হেঁটে আহার খোঁজে; খাদ্যতালিকায় আছে শামুক, পোকামাকড় ও লতাগুল্ম, তবে প্রানীজ খাদ্য বেশি পছন্দ করে। দিনে এরা গাছের ডালে বসে ঘুমায় এবং আহারের খোঁজে গোধূলিতে পানির সামান্য ওপর দিয়ে ওড়ে চলে; ভোরে আবার দিনের আশ্রয়ে ফিরে আসে। পুরুষহাঁস শিঙ্গার মত আওয়াজ করে ডাকে: ক্রংক-ক্রংক.. । জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের প্রজনন ঋতুতে পানির কাছাকাছি কোন গাছের কোটরে ঘাস ও আবর্জনা দিয়ে বাসা বেঁধে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সবুজাভ-হলুদ; সংখ্যায় ৭-১০টি; মাপ ৬.৫-৪.৫ সেমি। ৩০ দিনে ডিম ফোটে।
বিস্তৃতি: বাদি হাঁস বাংলাদেশের প্রাক্তন আবাসিক পাখি; চট্টগ্রাম বিভাগের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে দেখা মিলত, এখন নেই (সম্প্রতি পাখিটি এদেশে কারও নজরে পড়েনি)। এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি কেবল এশিয়ার মধ্যে সীমিত, প্রধানত উত্তরপূর্ব ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্বভাগ পর্যন্ত রয়েছে।
অবস্থা: বাদি হাঁস বিশ্বে বিপন্ন ও বাংলাদেশে মহাবিপন্ন বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন মাত্র ২৫০-৯৯৯টির মতো পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Endangerd En) বলে ঘোষণা করেছে।[২] বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিবিধ: বাদি হাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ কায়রোর হীরক-হাঁস (ইতালিয়ান: cairino = কায়রোর অধিবাসী ; ল্যাটিন: scutulatus = হীরা-আকৃতি)।
তথ্যসূত্র:
১. মো: আনোয়ারুল ইসলাম ও এম কামরুজ্জামান, (আগস্ট ২০০৯)। “পাখি”। আহমাদ, মোনাওয়ার; কবির, হুমায়ুন, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমদ, আবু তৈয়ব আবু। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ২৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা -১৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0।
২. “Asarcornis scutulata“, http://www.iucnredlist.org/details/22680064/0, The IUCN Red List of Threatened Species। সংগ্রহের তারিখ: ২৩ আগস্ট ২০১৮।
৩. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত সংখ্যা, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৪৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।