আলকুশি বা বিলাই খামচি একটি বর্ষজীবী লতা

লতা

আলকুশি

বৈজ্ঞানিক নাম: Mucuna prurita Hook. সমনাম: Carpogon capitatus Roxb, Carpogon niveus Roxb, Carpopogon capitatus Roxb, Carpopogon niveum Roxb, Carpopogon pruriens (L.) Roxb, Dolichos pruriens L, Macranthus cochinchinensis Lour, Marcanthus cochinchinense Lour, Mucuna aterrima (Piper & Tracy) Holland, Mucuna atrocarpa F.P.Metcalf, Mucuna axillaris Baker, Mucuna bernieriana Baill, Mucuna capitata Wight & Arn, Mucuna cochinchinense (Lour.) A.Chev, Mucuna cochinchinensis (Lour.) A.Chev, Mucuna deeringiana (Bort) Merr, Mucuna esquirolii H. Lév, Mucuna esquirolii H.Lev, Mucuna hassjoo (Piper & Tracy) Mansf, Mucuna hirsuta Wight & Arn, Mucuna luzoniensis Merr, Mucuna lyonii Merr, Mucuna martinii H.Lev. & Vaniot etc ইংরেজি নাম: Velvet bean, Cowitch, Cowhage, Kapikachu, Nescafe, Sea bean. বাংলা নাম: আলকুশি বা বিলাই খামচি; হিন্দি ভাষায় নাম: কেওয়াজ, উড়িষ্যায় বাইডঙ্কা 
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Magnoliophyta অবিন্যাসিত: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Fabales পরিবার: abaceae উপপরিবার: Faboideae গণ: Mucuna প্রজাতি: M. pruriens

 আলকুশি বা বিলাই খামচি গাছের ঔষধি গুণাগুণ

পরিচয়: সাধারণত বর্ষজীবী লতা হলেও কখনও কখনও বহুদিন বেঁচে থাকতে দেখা যায়। লতা ও পাতা অনেকটা সিম গাছের মতো লতানো হয়। যদিও পাতা ৮ থেকে ১২ সেন্টিমিটার হয় এবং সেটা মসৃণ ও লোম দ্বারা ঢাকা থাকে।[১] কিন্তু পাতার আকৃতি ও বিন্যাস আমাদের দেশে প্রচলিত শাক আলুর গাছের পাতার মতো, সেইরকম একই বৃন্তে ৩টি পাতা, লতা গাছে ও পাতায় সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম  রোম আছে। পুষ্পদণ্ড সবদাই অবনত থাকে, সেগুলি লম্বা ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি হয়। এর ফলের রং গাঢ় বেগুনি বর্ণের। পুষ্পদন্ডে গুচ্ছবদ্ধ শুঁটি হয়, সেগুলি লম্বা হয় প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি, শুঁটির গায়ের লোমগুলির রং বানরের গায়ের রংয়ের মতো দেখতে।

এই ফলগুলি যখন পাকে যায়, তখন বাতাসে এই লোমগুলি উড়ে ছড়াতে থাকে, কিছুদিন বাদে ঐ শুঁটি ফল ফেটে বীজগুলি গাছের তলায় পড়ে যায়; অবশ্য এটি অযত্নে বেড়ে ওঠা এক ধরণের পরগাছা লতা। এর প্রচলিত বাংলা নাম আলকুশী, হিন্দিভাষী অঞ্চলে একে বলে কেওয়াজ বীজ আর উড়িষ্যার অঞ্চল বিশেষে একে বলে বাইডঙ্কা। গ্রামে এই ফলের গায়ের লোমগুলিকে ‘দয়ার গুড়ো’ বলে, যখন এই ফল পাকে যায় তখন ঐ গাছের তলায় গেলে কোনো রকমে শরীরে ঐ লোমা লাগলে চুলকোতে থাকে। তারপরে চাকা চাকা হয়ে ফুলে যায়।

আরো পড়ুন:  ঝিঙ্গা বা ঝিঙা-এর হচ্ছে সারা বিশ্বে আবাদকৃত একটি সবজি

পাশ্চাত্য উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের সমীক্ষার প্রতিবেদন হলো পৃথিবীর উষ্ণপ্রধান দেশাঞ্চলে এই গণের (genus) ২০টি প্রজাতি আছে, তার মধ্যে ভারতে ১০টি পাওয়া যায়; তবে এই আলকুশি বাংলাদেশ, ভারতের বিহার, উড়িষ্যা, নেপালের তরাই অঞ্চলে পাওয়া যায়, উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম ভারতের বনাঞ্চলে এর অভাব নেই; তবে সাধারণত এটা তিন হাজার ফুট উচ্চতার মধ্যেও দেখা যায়। ঠিক আলকুশির মতো একই রকম গাছ অথচ ফুলে যে তফাত, সেটা আমাদের মতো সাধারণের চোখে ধরা পড়ে না, তবে তার শুঁটি ফল হলেই তার পার্থক্য নজরে আসে, সেই পার্থক্যটা হলো, এই ফলগুলোর গায়ে রোম হয় না বললেই হয়, আর সেটা গায়ে লাগলেও চুলকোয় না। এটির চাষ হয় ভারতের উত্তর প্রদেশে। প্রাচীনগণের মতে চরক সংহিতায় এইটিই কাকান্ডোল নামে পরিচিত। এর বোটানিকাল নাম Mucuma utilis Wall তবে কাকান্ডোল নামে প্রচলিত গাছটির বীজ আলকুশীর বীজ বলে বিক্রি হয়ে থাকে। [২]

বিস্তৃতি: বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ এশিয়ার কিছু দেশে এই লতা জন্মে থাকে।

চাষ পদ্ধতি: আলকুশি এক ধরণের লতানো পরগাছা। যত্ন ছাড়াই এটি বন জঙ্গলে জন্মে থাকে। তবে গুয়েতেমালায় কেচি নামে একধরণের সম্প্রদায়ের মানুষ এটাকে খাদ্যশস্য হিসেবে আবাদ করে থাকে। আলকুশি গাছে প্রায় সারা বছরেই ফুল ও ফল হয়।

ব্যবহার্য অংশ: ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় এর মূল ও বীজ।

তথ্যসূত্রঃ

১. শেখ সাদি; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ৫২।

২. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ২১৯।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!