সাতকড়া এশিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলের আবাদি টক ফল

ফল

সাতকড়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Citrus hystrix DC., Cat. Pl. Hort. Bot. Montp.: 97 (1813). সমনাম: Citrus tuberoides J. W. Benn. (1842). ইংরেজি নাম : Kaffir Lime, Mauritius Papeda, Leech-lime. স্থানীয় নাম: সাতকড়া।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Eudicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Sapindales পরিবার: Rutaceae গণ: Citrus প্রজাতির নাম: Citrus hystrix

ভূমিকা: সাতকড়া বা সাতকরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Citrus hystrix ইংরেজি নাম: Kaffir Lime, Mauritius Papeda, Leech-lime) হচ্ছে  সপুষ্পক একটি উদ্ভিদ। এই প্রজাতিটি ছোট বৃক্ষ আকারে হয়ে থাকে।

বর্ণনা: সাতকড়া মধ্যম আকৃতির বৃক্ষ, ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়, অণু শাখাপ্রশাখা চ্যাপ্টা এবং কোণাকার, কন্টক খাটো এবং দৃঢ়।

পত্র একপত্রিক, বৃন্তক, বৃন্ত সমান বা পত্রক থেকে বড়, বি-হৃৎপিন্ডাকারভাবে বিডিম্বাকার বা বিবল্লমাকার, উপাঙ্গের নিম্নে পত্রবৃন্তের অংশ ০.৫-০.৮ সেমি লম্বা, খাঁজবিশিষ্ট বা দাগযুক্ত, পত্রক ডিম্বাকার-উপবৃত্তাকার বা বল্লমাকার, ৪-১০ x ২-৫ সেমি, শীর্ষ খাঁজবিশিষ্ট, অখন্ডিত বা সূক্ষ্মভাবে গোলাকার দন্তর, চর্মবৎ, তৈলাক্ত গ্রন্থিল দাগযুক্ত।

পুষ্প কাক্ষিক, একল বা স্বল্প-পুষ্পক খাটো সাইম, কুঁড়িতে বিডিম্বাকার, সাদা বা হালকা রক্ত-বেগুনি, সুগন্ধি, পুষ্পবৃন্ত ৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা। বৃতি ছোট ৪-৫টি, ব-দ্বীপ আকার, দন্তক। পাপড়ি ৪টি, বিডিম্বাকার বা বিবল্লমাকার, ০.৮-১.০ সেমি লম্বা।

পুংকেশর ২০ থেকে ২৫টি, পুংদন্ড মুক্ত, বলিষ্ঠ, মসৃণ। গর্ভাশয় গোলাকার, মসৃণ, গর্ভদন্ড ০.৫ সেমি লম্বা, বলিষ্ঠ, গর্ভমুন্ড বৃহৎ, গোলাকার।

ফল গোলাকার বা বিডিম্বাকার বেরী, ৫-৭ সেমি চওড়া, সবুজ থেকে হলুদ, অনিয়মিতভাবে খুব অসম গাত্রবিশিষ্ট, ১০-১২ খন্ডিত, রস খুবই অশ্লীয়।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ১৮ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: সাতকড়া বাসা-বাড়ি ও বাগান লাগানো হয়। বীজ দ্বারা এবং জোড় কলম দ্বারা । ফুল ও ফল ধারণ সেপ্টেম্বর-জানুয়ারি ।

বিস্তৃতি: ইন্দোনেশিয়ার স্বদেশী, কিন্তু বিস্তৃতভাবে প্রাকৃতিক মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা এবং মায়ানমার, এবং ভারতে (আসাম) আবাদী। বাংলাদেশের মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলায় আবাদী।

আরো পড়ুন:  পানি লেবু উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের ফল

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: সুগন্ধি পাতা মসলা হিসেবে এবং বিভিন্ন সুগন্ধিকরণ কাজে ব্যবহৃত হয়। রস কখনো খাদ্য ও পানীয় তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। সূক্ষ্মভাবে চূর্ণ বাকল সুগন্ধিকরণে ব্যবহৃত হয়, নি:সৃত তেল প্রসাধনী ও সৌন্দর্যের উপাদান তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: সুগন্ধি পত্র এবং বাকল কারী হিসেবে ব্যাপকভাবে থাইল্যন্ড, মালয়েশিয়া এবং বৃহত্তর সিলেট জেলায় ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের খণ্ডে ১০ম(আগস্ট ২০১০)   সাতকড়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে সাতকড়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি সংরক্ষণের তেমন প্রযোজন নেই।[১]

তথ্যসূত্র:
১.  এম. আমান উল্লাহ  (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৬৭-১৬৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!