পরিচিতি: জাম, রাজজাম, ভুতে জাম বা কালো জাম (বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium cumini (Linn.) Skeels.) (ইংরেজি নাম Jamun Black plum বা black berry) যাই বলি, এই সব একই ফল। এরা মিরটাসি পরিবারের সাইজিজিয়াম গণের একটি সপুষ্পক বৃক্ষ। তবে জামেরও কিছু জাত আছে। রাজ জাম বা ভুতে জাম দেখতে বেশ বড়, রসাল আর সুস্বাদু। বেশ মাংসল হয় ও আঁটি ছোট। কিছু জামের আকার ছোট আর বিচি বড় ও টক মিষ্টি স্বাদের। জামের ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে পড়ুন
বিবরণ: কালো জাম গাছ চিরসবুজ গাছ। এটি বড় আকারের বৃক্ষ। ২০ মিটারেরও বেশি লম্বা হয়ে থাকে। গাছের কাণ্ডের রঙ ধূসর ও ডালের মাথায় পাতা জোড়ায় জোড়ায় লাগানো থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে গাছে ফুল আসে ও মে ও জুন মাসে ফল পাকে। ফল ধরে থোকায় থোকায়। একটি থোকায় ১০ থেকে ২০টি জাম ধরে। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ বর্ণের। পাকা ফলের রঙ প্রথমে লালচে বেগুনি হয় ও পরে কালো হয়ে যায়। ফল ডিম্বাকার থেকে চমচমের আকৃতির। পাকা ফলের শাঁস বেগুনি ও রসালো হয়। ভিতরে একটা শক্ত বিচি থাকে।
বিস্তৃতি: কালো জাম দক্ষিণ ভারত, পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ বা থাইল্যান্ড। জামের জন্মস্থান বলে ধারণা করা হয়। সমগ্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার প্রভৃতি দেশে জাম জন্মে।
চাষ পদ্ধতি: বীজ থেকেই জামের গাছ হয়। তবে মাতৃগুণ বজায় রেখে গাছ বানাতে চাইলে গুটি কলম করে জামের নতুন চারা তৈরি করা যায়। এত অল্প বয়সের গাছেই ফল ধরে। এ দেশে এখনো জাম বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়নি।
ব্যবহার: সাধারণত পাকা জামই বেশি খাওয়া হয়। পাকা ফলের সাথে লবণ মশলা দিয়ে মেখে খেতে খুব মজা লাগে। পাকা ফল থেকে কোন কোন দেশে স্কোয়াশ বা শরবত, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি তৈরি করা হয়। পাকা জামের রসে অধিক পরিমাণে পেকটিন থাকায় তা অন্য ফলের রসের সাথে মিশিয়ে ভাল জেলি তৈরি করা যায়। এমনকি কেউ কেউ কাঁচা ফল থেকে ভিনেগার তৈরি করছেন। সেটাকে ‘জামুন ভিনেগার’ নামে পরিচিত। এ ভিনেগার সাধারণ ভিনেগারের মতোই ব্যবহার করা যায়। তবে এটা আরও ভাল। কেননা, এ ভিনেগারের রঙ হয় বেগুনি ও তা থেকে জামের সুগন্ধ বের হয়। জাম গাছের বাকল ও বীজের রস ডায়াবিটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। জাম গাছে যখন ফুল ফোটে তখন প্রচুর মৌমাছির আনাগোনা করে। তারা মধু তৈরিতে সাহায্য করে।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Forestowlet
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।