পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বাংলাদেশের সুন্দরবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এর নদী, যা জালের মতো ঘিরে রেখেছে এই অরণ্যভূমিকে।[১] সুন্দরবন অঞ্চলের খাল গাং ও নদীমালা আছে প্রায় ১৭৭টি। এসব নদীর ভেতরে মাতলা একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। নদীটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার একটি নদী।[২]
প্রবাহ: নদীটি পুরন্দরের কাছে প্রবাহ পথে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটি প্রবাহ কুলতলি গরানবোস হয়ে সুন্দরবন গেছে অন্য প্রবাহটি বাসন্তি, পাঠানখালি, সূর্যবেড়িয়া হয়ে বিদ্যাধরী নদীতে মিলিত হয়েছে।
পশ্চিমে মাতলা নদী-পদ্ধতির পার্শ্ববর্তী সংযোগ নদীগুলি হলো বেলাডোনা নদী, কুলতলা নদী, পাইলিয়া-নবিপুকুর নদী, বৈঁছাপী খাল, কৈকলমারী নদী, সুইয়া নদী, দুলিভাসানী গাং এবং গোখালতলী গাং। মাতলা নদীর পূর্বদিকের প্রধান সংযোগগুলি গোসবা এবং রাইমঙ্গল ব্যবস্থার সাথে আরও জটিল এবং অনেকগুলি চ্যানেলে পূর্ণ যেগুলোর নাম উল্লেখের দাবি রাখে। এই বেল্টের গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহগুলি রুপখালী খাল, পাঠানখালী নদী, পিরখালী নদী, গাজীখালী খাল, পঞ্চমুখানি খল, মায়ানদী খাল, মায়াদীপ নদী, ভঙ্গদুনী নদী, কালিন্দী নদী, কলাগাছিয়া নদী, রাইমঙ্গল নদী, ঝিল্লা নদী, গোমা নদী এবং হরিণভাঙ্গা নদী।[৩]
সুন্দরবন অঞ্চলের খাল, গাং ও নদীমালা
বর্ষাকালে মাতলা নদীতে পানির প্রবাহ অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যাবার ফলে মাতলা নদীটিতে নৌকা বা লঞ্চ চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বর্ষায় মাতলা নদী ভয়ংকর হয়ে ওঠে। আবার শুখা মরশুমে নদীটিতে জলের প্রবাহ কমে যায় ফলে নৌকা বা লঞ্চ নদীর তীরের জেটিতে আসতে পারে না। বর্ষার সময় নদীটি দুই তীরে প্লাবিত করে বন্যা সৃষ্ট করে। বন্যা থেকে আশেপাশের এলাকার গ্রামগুলি রক্ষা করার জন্য মাতালের দীর্ঘ অংশে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
১ মানিক, মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃ: ৪৬১-৪৬২। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
২ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০৭-৪০৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
৩. The Sundarbans of India: a development analysis By Asim Kumar Mandal. Retrieved 2009-10-27.
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।