তেতুলিয়া নদী বা তুলাই নদী বা তুল্লাই নদী (ইংরেজি: Tetulia River) বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার কাহারোল, বোঁচাগঞ্জ ও বিরল উপজেলার এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি নদী। নদীটির স্থানীয় নাম তুলাই নদী।
নদীটির দৈর্ঘ্য ৫৬ কিলোমিটার, প্রস্থ ৪৫ মিটার এবং গভীরতা ৫.৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন ৬৩ বর্গকিলোমিটার। নদীটি বাংলাদেশের ভেতরে কাহারোল, বোঁচাগঞ্জ ও বিরল উপজেলার মধ্যে ঘন ঘন বাঁক বদল করায় দৈর্ঘ্য বেড়েছে বহুগুণ। নদীর পানিপ্রবাহ মৌসুমি প্রকৃতির। ডিসেম্বর হতে মার্চ মাস অবধি শুকনো মৌসুমে পানিপ্রবাহ থাকে না। বর্ষা মৌসুমে জুলাই মাসে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮০ ঘনসেন্টিমিটার/সেকেন্ড হয়। নদীতে জোয়ার ভাটার প্রভাব নেই। সাধারণত বন্যা হয় না। এই নদীর উপর ফুলবাড়ি ও বুনিয়াতপুরে ৩টি সেতু আছে।
তেতুলিয়া নদী প্রবাহ
তেতুলিয়া নদী দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার ডাবর বিল থেকে উৎপন্ন হয়ে গতিপথে বোচাগঞ্জ উপজেলায় সামান্য অংশ প্রবাহিত হয়ে একই জেলার বিরল উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে টাঙ্গন নদীতে নিপতিত হয়েছে।
প্রাচীন সভ্যতা: খুব প্রাচীন বিল ও এই নদী অববাহিকায় প্রাচীন চিহ্নিত অচিহ্নিত অনেক প্রত্ননিদর্শন রয়েছে। পাল আমলের বা দেড় হাজার বছর আগের প্রত্ননিদর্শনও রয়েছে। ধারনা করা যায় বহু অচিহ্নিত নিদর্শন ও বহু কীর্তি এই অঞ্চলে লুকিয়ে আছে এবং বহু প্রাচীন সভ্যতা একে একে কালের গর্ভে চলে গেছে। বহু প্রাচীন কালের এই নদী নিজেই এখন প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণার বিষয় হয়ে পড়েছে।
তথ্যসূত্র
১. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ২২৫-২২৬।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।