কাওয়াটুটি বাংলাদেশের পাহাড়িঞ্চলে জন্মানো উপকারী বৃক্ষ

কাওয়াটুটি

বৈজ্ঞানিক নাম: Fernandoa adenophylla (Wall. ex G. Don) van Steenis, Blumea 23: 135 (1976). সমনাম: Bignonia adenophylla Wall. ex G. Don (1838), Spathodea adenophylla (Wall. ex G. Don) DC. (1845), Heterophragma adenophylla (Wall. ex G. Don) Benth. (1875), Heplophragma adenophyllum (Wall. ex G. Don) P. Dop. (1925). ইংরেজি নাম: Katsagon. স্থানীয় নাম: বড় পাতা, ডাক্রম, কাওয়াটুটি।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Lamiales. পরিবার: Bignoniaceae. গণ: Fernandoa প্রজাতির নাম: Fernandoa adenophylla

কাওয়াটুটি (Fernandoa adenophylla) এশিয়ার কিছু দেশে জন্মে। পাহাড়িঞ্চলে জন্মে। এতে ভেষজ গুণ আছে। এই গাছের কাঠ দিয়ে আসবাব বানানো হয়।

কাওয়াটুটি-এর বর্ণনা:

কাওয়াটুটি প্রায় ১২ মিটার উঁচু বৃক্ষ এবং প্রধান অক্ষ সুস্পষ্ট। পত্র প্রতিমুখ, বৃহৎ, একপক্ষল, সচূড় পক্ষল, পত্রক ৫-৭টি, বৃহৎ, প্রশস্ত, উপবৃত্তাকার। পুষ্পবিন্যাস বৃহৎ প্যানিকেল বা মিশ্র প্যানিকেল, শীর্ষ কোমল রোমশ। পুষ্প সম্পূর্ণ, উভলিঙ্গ, অধিগর্ভ, সামান্য এক প্রতিসম। বৃতি ৫ টি যুক্ত বৃত্যংশ নিয়ে গঠিত, মুক্তাবস্থায় ৩-৫ টি অসম খন্ডে বিভক্ত, প্রান্ত-আচ্ছাদী। দলমন্ডল ৫ টি পাপড়ি নিয়ে গঠিত, যুক্ত, নলাকার, হালকা বেগুনি লাল, প্রান্ত-আচ্ছাদী, সামান্য অসম।

পুংকেশর ৪ টি, দীর্ঘদ্বয়ী, পরাগধানী দীর্ঘায়ত-রৈখিক, মসৃণ, গর্ভপত্র ২ টি, যুক্ত, গর্ভাশয় অধিগর্ভ, ২-কোষী, অবৃন্তক, ডিম্বক অসংখ্য, বহু সারিবদ্ধ, অমরাবিন্যাস অক্ষীয়, গর্ভদন্ড লম্বা, রৈখিক, গর্ভমুন্ড দ্বিখন্ডিত। ফল বেলনাকার ক্যাপসিউল, ৮০ সেমি লম্বা, ২ সেমি প্রশস্ত, পাকানো, অনুদৈর্ঘ্য বরাবর ২-কপাটিকা যুক্ত। বীজ চাপা, ৩.৫ সেমি লম্বা, প্রতিপার্শ্বে ২ টি ঝিল্লিযুক্ত পক্ষ। ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n = 80 (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল : চিরহরিৎ এবং অর্ধ-চিরহরিৎ অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ সময় এপ্রিল-নভেম্বর। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়।

কাওয়াটুটি-এর বিস্তৃতি:

ভারত (আসাম ও আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ), মায়ানমার, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলার অরণ্যাঞ্চলে জন্মে।

আরো পড়ুন:  উলুচা বাংলাদেশের পাহাড়ীঞ্চলে জন্মানো গুল্ম

ব্যবহার:

কাঠ আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত (Dev, 1983)। পাতা থেকে লিগনিন ও ফিনাইল প্রোপানয়েড গ্লাইকোসাইড পাওয়া যায় (Kanchanapoom et al., 2001)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কাওয়াটুটি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে কাওয়াটুটি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন নেই।[১]

তথ্যসূত্র:

১. এ টি এম নাদেরুজ্জামান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ম (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৬-১৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম:  Aarti Khale

Leave a Comment

error: Content is protected !!