ভূমিকা: চোকলা হচ্ছে মালভেসি পরিবারের হেরিটিয়েরা গণের সপুষ্পক উদ্ভিদের একটি প্রজাতির নাম।
বর্ণনা: চোকলা ক্ষুদ্র হতে মাঝারী-আকৃতির বৃক্ষ, ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, কচি শাখা তারকাকার-ঘন ক্ষুদ্র কোমল রােমাবৃত। এদের পাতা একান্তর, একফলক, ৪-১৬ x ৩-৭ সেমি, বল্লমাকার, বিবল্লমাকার অথবা আয়তাকার হতে উপবৃত্তীয়, গােড়া স্থূলাগ্র। পাতার শীর্ষ অস্পষ্টভাবে দীর্ঘাগ্র, অখন্ড, চর্মবৎ, পত্রবৃন্তক প্রায় ২ মিমি লম্বা, শল্কাকার।
চোকলার পুষ্প অক্ষীয় প্যানিক্যালে বিন্যস্ত, ঘন তারকাকার ঘন ক্ষুদ্র কোমল রােমাবৃত শল্ক দ্বারা আবৃত। বৃত্যংশ ৫টি, বৃতি। ঘন্টাকার। পাপড়ি অনুপস্থিত। পুং পুষ্প সরু পুংকেশরীয় স্তম্ভে যুক্ত, একটি উভলিঙ্গবহের নিয়মিত বলয়ে পরাগধানীর রেণু আধার সজ্জিত। স্ত্রী পুষ্প ৫-৬ অবৃন্তক গর্ভাশয়বিশিষ্ট, তারকাকার শল্কাকৃতি, গর্ভাশয়ের গােড়ায় বন্ধ্যা পরাগধানীর রেণু আধার বিদ্যমান। ফল একটি সামারা, ৫-৭ সেমি লম্বা, মসৃণ, এক-বীজবিশিষ্ট।
বংশ বিস্তার ও আবাসস্থল: চোকলার ফুল ও ফল ধারণ ঘটে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাসে। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা। আবাসস্থল পাহাড়ি বনভূমি।
বিস্তৃতি: ভারত, বাংলাদেশে ইহা সিলেট জেলার বন থেকে রিপাের্ট করা হয়েছে (Alam, 1988).
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: চোকলার কাঠ শক্ত এবং সূক্ষ্ম পালিশ প্রদান করে। ইহা লম্বা খুঁটি এবং স্তম্ভের ন্যায় অস্থায়ী কাঠামাে তৈরী এবং কৃষি সংক্রান্ত উপকরণ তৈরীতে ব্যবহৃত হয় (Purkayastha, 1996)। এদের জাতিতাত্বিক ব্যবহার জানা নেই।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চোকলা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ আবাসস্থল ধ্বংস। বাংলাদেশে এটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে তথ্য সংগৃহীত হয়নি (NE), কিন্তু দুর্লভ বলে মনে হয়। বাংলাদেশে চোকলা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে শীঘ্র ইন-সিটু ও এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণ প্রয়ােজন।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এম আহসান হাবীব (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৪৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।