জগডুমুর ঔষধি ফল হিসাবে খাওয়া নানাবিধ উপকারিতা

জগডুমুর বা যজ্ঞডুমুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Ficus racemosa. এরা মোরাসি পরিবারভুক্ত ফাইকাস গণের উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের বৃক্ষ। এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্ভিদ। এটির ফল রান্না করে এবং পাকার পরে খাওয়া যায়। দেশি রেসাস বানরের এটি প্রধান খাবার। অনেক পাখি স্তন্যপায়ী ও প্রাণীর পছন্দের খাবার। জগডুমুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন

জগডুমুর এশিয়ার অপ্রচলিত ফল ও সবজি

ঔষধি ব্যবহার:

১. কোনো জায়গায় কেটে রক্তপাত হতে থাকলে ঐ ঘনসার লাগালে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যথা হবে না এবং ওটাতেই সেরে যাবে।

২. বিড়াল, ইদুর, বোলতা, ভীমরুলে বা কোনো জানা-অজানা বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ে অথবা কুকুরের আঁচড়ে (আঁচড়ে দিয়েছে এমন ক্ষেত্রে) ওটা লাগালে জ্বালা যন্ত্রণার উপশম হবে এবং ব্যথাও হবে না।

৩. দেহের কোনো জায়গা থেতলে গেলে বা আঘাত লেগে ব্যথা হলে ওটায় ২ গুণ জল মিশিয়ে পেস্টের মতো লাগালে ব্যথা ও ফলা দুই-ই কমে যাবে।  

৪. ফোড়ায়: এই ঘনসার ৪ গুণ জলে গুলে ন্যাকড়া বা তুলোয় লাগিয়ে বসিয়ে দিলে ওটা ফেটে পুজ-রক্ত বেরিয়ে যাবে। এইভাবে ব্যবহারে কয়েকদিনেই সেরে যাবে।

৫. মুখের দুর্গন্ধ: দাঁতের গোড়া বা মাড়ি ফোলা ও ব্যথা, গলায় বা মুখের ক্ষতে এই ঘনসারে আটগুণ জল মিশিয়ে কবল (Gargle) করলে অথবা মুখে কিছুক্ষণ রেখে দিলে ২ থেকে ১ দিনেই উপশম হবে এবং এইভাবে ব্যবহারেই সেরে যাবে।

৬. ক্ষেত্র হিসেবে ৮ থেকে ১২ গুণ জলে গুলে ডুস দিলে স্ত্রীরোগজনিত স্রাব নিশ্চিত প্রশমিত হয়।

আভ্যন্তরীণ প্রয়োগ (Internal application): রক্তপিত্তে (Haemoptysis), রক্তার্শে (Bleeding piles) ও রক্তস্রাবে ১২ গ্রেণ আন্দাজ মাত্রায় ২ আউন্স বা এক ছটাক জলে মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেলে বিশেষ উপকার হয়। এই পাতার গুণ সম্পর্কে পাশ্চাত্য বিজ্ঞানীদের ২ থেকে ১টি মন্তব্য এখানে তুলে ধরা হলও।

আরো পড়ুন:  দেশি গাব গাছের আছে নানা ঔষধি গুণাগুণ ও ব্যবহার

পাশ্চাত্য গবেষকগণও পরীক্ষিত ঔষধ হিসাবে বলেছেন যে, ডুমরের পাতার গুড়ো মধুর সঙ্গে খেলে পিত্তবিকৃতিজনিত রোগ (Bilious affections) নিরাময় হয়। আর একটি এই যজ্ঞডুমুরের পাতার উপর যে অর্বুদ (Gall) হয় (একে আয়ুর্বেদের ভাষায় বলা হয় শূন্যগর্ভ), সেটা দুধে ভিজিয়ে মধুর সঙ্গে বসন্তে (Small pox) ব্যবহার করলে বিশেষ উপকার হয়।

রাসায়নিক গঠন:

(b) Dihydropsoralen. (c) Hydroxy (a) Dichlorobenzoic acid. coumarin, (d) Enzyme.

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্রঃ

১ আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ১, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১৩২-১৩৩।

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!