নারী

সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি

৩১. নারী

*** চীনের পুরুষেরা সাধারণত তিন ধরনের ক্ষমতার ব্যবস্থার দ্বারা [রাজনৈতিক ক্ষমতা, গোষ্ঠীগত ক্ষমতা, ধর্মগত ক্ষমতা — সম্পাদকীয়] শাসিত… নারীদের পক্ষে উপরোক্ত এ তিন ধরনের ক্ষমতার দ্বারা শাসিত হওয়া ছাড়াও, তাঁরা পুরুষদের দ্বারা শাসিত (স্বামীত্বের ক্ষমতার দ্বারা)। এ চারটি ক্ষমতা রাজনৈতিক ক্ষমতা, গোষ্ঠীগত ক্ষমতা, ধর্মগত ক্ষমতা ও স্বামীত্বের ক্ষমতা সমস্ত সামন্ততান্ত্রিক পিতৃপ্রধান মতাদর্শ ও ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে, আর এগুলোই হচ্ছে চারটা মস্ত মোটা দড়ি, যা চীনা জনগণকে বিশেষ করে, কৃষকদের বেঁধে রেখেছে। কৃষকেরা গ্রামাঞ্চলে কেমন করে জমিদারদের রাজনৈতিক ক্ষমতা উচ্ছেদ করেছেন, তা উপরে বর্ণিত হয়েছে। জমিদারদের রাজনৈতিক ক্ষমতা হচ্ছে সমস্ত ক্ষমতার মেরুদণ্ড। জমিদারদের রাজনৈতিক ক্ষমতার উচ্ছেদ ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই গোষ্ঠীগত ক্ষমতা, ধর্মগত ক্ষমতা ও স্বামীত্বের ক্ষমতা সবই টলায়মান হয়ে পড়ে।… স্বামীত্বের ক্ষমতা এ জিনিসটা গরীব কৃষকদের মধ্যে সর্বদাই দুর্বলতর, কারণ আর্থিক অবস্থার দরুন গরীব কৃষক-নারীরা ধনী শ্রেণীর নারীদের চেয়ে বেশি শ্রম করে পারেন না, তাই পারিবারিক ব্যাপারে কথা বলার অধিকার, এমনকি সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার তাঁদেরই বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতির দেউলেপনা বেড়ে উঠতে থাকায় নারীদের উপর পুরুষদের নিয়ন্ত্রণের মৌলিক শর্তে ইতিমধ্যেই ভাঙ্গন ধরেছে। বর্তমান কৃষক আন্দোলনের আরম্ভের সঙ্গে সঙ্গেই অনেক জায়গায় নারীরা পল্লী নারী সমিতি সংগঠন করেছেন, নারীদের মাথা তুলে দাঁড়াবার সুযোগ এসেছে এবং স্বামীত্বের ক্ষমতা দিনের পর দিন থরথর করে কাঁপছে। এক কথায়, কৃষকদের ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত সামন্ততান্ত্রিক পিতৃপ্রধান মতাদর্শ ও ব্যবস্থা টলমল করছে। “হুনান কৃষক আন্দোলনের তদন্তের রিপোর্ট (মার্চ, ১৯২৭)

*** ঐক্যবদ্ধ হোন, উৎপাদন ও রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করুন, নারীদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি করুন। “নয়া চীনের নারী” পত্রিকার জন্য অভিলেখন (২০ জুলাই, ১৯৪৯)

*** যুবক, মহিলা ও শিশুদের স্বার্থ রক্ষা করুন, পড়াশুনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত যুবকদের সাহায্য করুন, জাপানবিরোধী যুদ্ধ ও সামাজিক প্রগতির জন্য হিতকর বিভিন্ন কাজে সমানাধিকারের ভিত্তিতে যোগদানের জন্য যুবক ও মহিলাদের সংগঠিত হতে সাহায্য করুন, বিবাহের স্বাধীনতা ও নরনারীর সমানাধিকার বাস্তবায়িত করুন এবং যুবক ও শিশুদের হিতকর শিক্ষা দিন… “যুক্ত সরকার সম্পর্কে” (২৪ এপ্রিল, ১৯৪৫)

আরো পড়ুন:  কেডার

*** সংগঠিতভাবে শ্রমশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং উৎপাদন কাজে যোগদানের জন্য মহিলাদেরকে উৎসাহদান করাই হলো আমাদের কৃষি উৎপাদন ক্ষেত্রের সবচেয়ে মৌলিক কর্তব্য। “আমাদের অর্থনৈতিক নীতি” (২৩ জানুয়ারি, ১৯৩৪)

*** একটা মহান সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের জন্য উৎপাদন কাজে যোগদান করতে ব্যাপক নারী-সাধারণকে জাগ্রত করার গুরুত্বটা খুবই বিরাট। উৎপাদনে পুরুষ ও নারীর সমান শ্রমের জন্য সমান বেতন দিতে হবে। কেবলমাত্র সমগ্র সমাজের সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নারী পুরুষের মধ্যে সত্যিকারের সমানাধিকার হাসিল করা যায়। “নারীরা শ্রমফ্রন্টের পথে যাত্রা করেছেন” এর ভূমিকালিপি (১৯৫৫)

*** কৃষি সমবায়করণের পর বহু সমবায় সমিতি শ্রমশক্তির স্বল্পতা বোধ করতে লাগলো, যারা আগে মাঠে কাজ করেন নি, সেই ব্যাপক নারী-সাধারণকে শ্রমফ্রন্টে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।… চীনের নারীরা হচ্ছেন জনশক্তির একটা মহান উৎস। একটা মহান সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রামে এই উৎসকে কাজে লাগাতে হবে। “উৎপাদনে যোগদানের জন্য নারীদের উদ্বুদ্ধ করে শ্রমশক্তির স্বল্পতার সমাধান হয়েছে”-এর ভূমিকালিপি (১৯৫৫)

*** ব্যতিক্রমহীনভাবে সমস্ত কর্মক্ষম নারীদের সমান শ্রমের জন্য সমান বেতনের নীতির ভিত্তিতে শ্রমফ্রন্টে যোগদানের জন্য টেনে নিন, এই দাবিটা যথাসম্ভব অল্প সময়ের মধ্যে কার্যকরী করতে হবে। “কৃষি সমবায়করণ আন্দোলনে নারীদের মধ্যে কাজ চালানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে সিংথাই জেলার গণতান্ত্রিক নারী সমিতি” এর ভূমিকালিপি (১৯৫৫)

Leave a Comment

error: Content is protected !!