তীব্র অবজ্ঞা, উদাসীনতা ও রূঢ়তায় দগ্ধ
এক নিমোর্হ অনভিক্ত
অসংযত বালক কর্মহীন রাজপথে ভেসে গিয়ে
পায় কুড়িয়ে
লাল ত্যানায় মোড়া এক মুমূর্ষু কফিন;
বালকের কচি মন ভেবে ভেবে হয়রান
কী করবে সে সেই কাঠের কফিনখানি,
কীভাবে কফিনে করে নিয়ে যাবে একসাথে
এতো সব লাশ— বাপ দাদা নানী চাচা চৌদ্দ গোষ্ঠির?
সদুত্তরহীন ক্ষুব্ধ মনে
বিষন্নতার গাঢ় ক্ষণে
তন্দ্রামগ্নতার ঘোরে সে পেয়ে যায় সমাধান,
বালক তার নবলব্ধ ধারনার গুচ্ছ তেজে
করে নতুন ঘোষণা পাঠঃ
ভেঙে দেব ধাবমান পৃথিবীর
চৌকোণি ছয়কোণি ত্রিকোণি তত্ত্ব ও বোধ,
ছুঁড়ে দেব সুলিখিত বইগুলোর
গোলকধাঁধাঁয় ভরা সমগ্র পাতা,
প্রেমিকার চিঠি আর দাদাদের লাঠি;
সন্ধ্যাকালে সূর্য ডুবলে খুব ভালোমতো সেই
প্রথম সত্ত্বায় গড়া গ্রামীণ কিশোরটি পারবে বুঝতে;
ভূতাক্রান্ত পিতা তার
সব কথার মাথাতে বুকে পিঠে হাতে
কুকথার পুঁটলি বেঁধে
বানিয়েছিলো অদ্ভুতুড়ে শাকচুন্নির মোহন প্রাসাদ।
০৪.০৪.২০০৩
চিত্রের ইতিহাস: কবিতায় ব্যবহৃত অংকিত চিত্রটি অজানা শিল্পীর আঁকা চিত্র। চিত্রটির নাম জাদুমন্ত্রোচ্চারণ (The Incantation)। শিল্পী চিত্রটি আঁকেন উনিশ শতকে। চিত্রটি উইলিয়াম শেকসপীয়ারের ম্যাকবেথ নাটকের একটি দৃশ্যে, মাকবেথ তিন পেত্নীর সাথে সাক্ষাৎ করছে। ছবিটিকে উপরে নিচে কিছুটা ছেঁটে ফেলে ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।