বৈজ্ঞানিক নাম: Cheilocostus speciosus
সমনাম: Banksea speciosa, Hellenia speciosa
বাংলা নাম: কেও, কেওমূল, কেঁউ, কুস্তা, বন্দুই, শটি,
হিন্দি নাম: কেওকন্ড, কুষ্ট
সংস্কৃত নাম: কুষ্ঠা
ইংরেজি নাম: crêpe ginger, ‘Malay ginger’ এবং ‘White costus’
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants
অবিন্যসিত: Angiosperms
অবিন্যসিত: Monocots
অবিন্যসিত: Commelinids
বর্গ: Zingiberales
পরিবার: Costaceae
গণ: Cheilocostus
প্রজাতি: Cheilocostus speciosus C.Specht
পরিচিতি: কেও বা কেঁউ বহুবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। কিছু এলাকায় এটি চাষাবাদ করা হয়েছে এবং অনেক জায়গায় একটি আগ্রাসী প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
গাছ ঝোপালো। শিকড় থেকেই অনেক ডালপালা বেরিয়ে ঘন ঝোপ সৃষ্টি করে। কেঁউ ঝোপ ৫-৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কাণ্ডের রং সবুজ ও শক্ত। কাণ্ডের শীর্ষপ্রান্তে ১-২টা ডাল বের হয়। কাণ্ড ১-১.৫ ইঞ্চি মোটা হয়। কেঁউ গাছের পাতার রং সবুজ। উপবৃক্তাকার, একপক্ষল পাতার বোঁটা ঠিক আর দশটা উদ্ভিদের বোঁটার মত নয়। বরং ফিতার মতো। ফিতাকৃতির বোঁটা কাণ্ডের গায়ে শাড়ির মত পেঁচিয়ে থাকে। পাতা মসৃণ। ৫-১০ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। মাঝ বরাবর পাতার প্রস্থ ৩-৪ ইঞ্চি। পাতার সামান্য পুরু, নরম। পাতার নিচের দিকটা পশমের মতো লোমে ঢাকা।
কেওয়ের ফুল খুব সুন্দর। তবে যেটাকে ফুল বলছি সেটা ঠিক ফুল নয়, পুষ্ণমঞ্জরি। পুষ্পমঞ্জিরি গুচ্ছ আকারে থাকে এবং এর রং লাল। মঞ্জরিতেও ত্রিকোণাকার পাতলা পাপড়ি আছে। প্রতিটা ত্রিকোণের ভেতর থেকে একটা করে মাইকাকৃতির সাদা ফুল ফোটে। ফুলের তেমন গন্ধ নেই। মৌসুমি ফুল, বর্ষার শেষ দিকে ফুল ফোটে। শ্বেতশুভ্র কেও ফুলের ওপর প্রজাপতি ও মৌমাছির ওড়াউড়িও চোখে পড়ার মতো।
সাধারণত ছায়াযুক্ত স্থানে, ঘন ঝোপ-ঝাড়ের ভেতরে, স্যাঁতসেঁতে জায়গায়, খাল ও নদীর ধারে, ভালো জন্মায়। কেও যেহেতু কন্দমূল জাতীয় উদ্ভিদ, তাই মূল থেকেই এর বংশবিস্তার ঘটে।
বিস্তৃতি: সারাদেশেই জন্মায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল, বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় কেও বেশি দেখা যায়। ভারতে ঔষধি বৃক্ষ হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। এটি মরিশাস, রেইউনিয়ন, ফিজি, হাওয়াই, কোস্টারিকা, বেলিজ, মেলানেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিকীকৃত।
ঔষধি গুনাগুণ: জ্বর, র্যাশ, এজমা, ব্রংকাইটিসে কাজে লাগে। এ গাছের মাটির নিচের কাণ্ড বা মূল ওষুধরূপে ব্যবহৃত হয়।[১]
আরো পড়ুন কেও বা কেঁউমূলের ঔষধি ব্যবহার
অন্যান্য ব্যবহার: এটি ব্যাপকভাবে একটি আলংকারিক উদ্ভিদ হিসাবে চাষ করা হয়।
তথ্যসূত্র:
১. আঃ খালেক মোল্লা সম্পাদিত;লোকমান হেকিমের কবিরাজী চিকিৎসা; মণিহার বুক ডিপো, ঢাকা, আক্টোবর ২০০৯; পৃষ্ঠা ২০৬।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।