বর্ণনা: গোল পিপুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Piper peepuloides) পিপারাসি পরিবারের পিপার গণের ঝোপাকার আরোহী লতা। এদের শাখাসমূহ স্ফীত পর্ববিশিষ্ট, কান্ড সরু, দৃঢ়। পাতা সরল, একান্তর, মসৃণ, ঝিল্লিময়, ডিম্বাকার-দীর্ঘায়ত, দীর্ঘায়ত বা রৈখিকাকার-দীর্ঘায়ত, পাদদেশ গোলাকার বা কিছুটা হৃৎপিণ্ডাকার, শীর্ষ দীর্ঘাগ্র, পাদদেশ সুস্পষ্টভাবে ৫-শিরাল, পত্রবৃন্ত ৩-১০ মিমি লম্বা।
এদের পুষ্প ক্ষুদ্র, বেলনাকার স্পাইকে ঘনভাবে বিন্যস্ত, মঞ্জরীপত্র বর্তুলাকার, ছত্রাকার। বৃত্যংশ এবং পাপড়ি অনুপস্থিত। পুং স্পাইক সরু, মঞ্জরীপত্র ছত্রাকার, পুংকেশর ২-৪টি, পুংদন্ড খাটো, পরাগধানী দ্বি-কোষী। স্ত্রী স্পাইক খাটো বেলনাকার, কদাচিৎ উপগোলকাকার, মঞ্জরীদন্ড অপেক্ষা বৃহদাকার, গর্ভাশয় অধিগর্ভ, গর্ভদন্ড খাটো, গর্ভমুণ্ড ২-৫টি, ডিম্বক একক, খাড়া। ফল ড্রুপ, ১ মিমি (প্রায়), গোলকাকার। বীজ উপবর্তুলাকার। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে জুলাই-ডিসেম্বর।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: জানা নেই।
আবাসস্থল: বনের মধ্যে ছায়াযুক্ত স্থান।
বিস্তৃতি: ভুটান, ভারত, নেপাল, লাওস, ক্যাম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং মায়ানমার। বাংলাদেশে ইহা সিলেট ও চট্টগ্রাম জেলার বনভূমি থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: ইহার ফলে সিসালাগগ গুণাবলী বিদ্যমান থাকায় ফল খাওয়ার পরে জিহ্বায় কাঁটা কাঁটা অনুভূত হয় (Sinha, 1996).
জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ভারতের খাসি এবং জৈন্তা পাহাড়ের বাসীন্দারা কুষ্ঠরোগে ইহার কান্ড এবং শিকড় ব্যবহার করে থাকে (Kanjilal et al., 1934).
বংশ বিস্তার: কর্তিত কান্ডের মাধ্যমে।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) গোল পিপুল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ নেই এবং বাংলাদেশে এটি আশংকা মুক্ত (lc) হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে গোল পিপুল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বর্তমানে সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন নেই।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এম আহসান হাবীব, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৯ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৯৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।