শসা-এর বৈজ্ঞানিক নাম: Cucumis sativus. Fuifacit cucurbitaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য অংশ— ফল, বীজ ও পত্র। এটি রসবহ ও মেদোবহ স্রোতে কাজ করে।
শসা-র উপকারিতা:
১. অরুচি রোগে: পিত্ত-শ্লেষ্মার আধিক্যে এ রোগ হয়, সাধারণতঃ ভাদ্র-আশ্বিনেই এ রোগ বেশী হ’তে দেখা যায়। এদের ঠাণ্ডা জিনিস খেতে ভাল লাগে, কিন্তু পিত্তের পক্ষে তা উপকার করলেও আম বা শ্লেম্মার পক্ষে ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে শসা পাতা (২। ৩টি) বাটা শসা পাতায় মুড়ে আগুনে ঝলসে অল্প লবণ মিশিয়ে, ভাতের সঙ্গে খেতে হবে। ভাল সরষের তেল হ’লে এর সঙ্গে ২/৫ ফোঁটা দিতে পারা যায়।
২. পিত্তাধিক্যে: এটা ভাদ্র-আশ্বিনেই বেশী হয়, এই সময় দেশ-গাঁয়ে শসাপাতা ও অল্প ডাল একসঙ্গে বেটে অল্প তেলে বড়া করে খাওয়ার রেওয়াজ আছে। এটাতেও পিত্তবিকার নষ্ট হয়।
৩. গলঃক্ষতে: পিত্তবিকার দীর্ঘদিন চলতে থাকলে গলার মধ্যে ঘা (ক্ষত) হয়, সেক্ষেত্রে পিত্তবিকারজনিত ঘা সারাতে হলে, শসার পাতা একটি আর সাদা জীরে ৪। ৫ গ্রাম একসঙ্গে থেতো ক’রে ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করতে হবে, সেটা (ওই জলটা) আন্দাজ এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেকে ওই জলটা সমস্তদিনে ৩। ৪ বারে অল্প অল্প ক’রে খেতে হবে। কয়েকদিন খেলে পিত্তবিকারজনিত ওই ঘা ভাল হ’য়ে যাবে।
৪. ভ্রম রোগে: যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের রোগটা যে মনোভিত্তিক তাই নয়, এটা দেহভিত্তিকও। উঠতি বয়স থেকে যাঁদের পিত্তাশয়ে প্রায়ই অধিক পিত্ত জমে, আবার পেটের দোষ হয়ে তা দাস্ত হয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন জাঠর অগ্নির বল কমে যাবে, তখন সেই পিত্তের প্রভাব ভ্রম রোগের সৃষ্টি করবে। আহার, কথা কওয়া এবং নিত্য নৈমিত্তিক কাজের ক্ষেত্রে তার ভ্রম হবে, এরা যদি পাকা শসা বেটে তার রস করে ৫। ৬ চা-চামচ করে খেতে পারেন, তাহলে ওটা ক্রমশই কমে যাবে। তবে সময় লাগবে, দু-এক দিন খেলেই যাবে না।
৫. মূত্রকৃচ্ছতাম মূত্রাঘাতে ও অশ্বরী রোগে: এই রোগগুলির ক্ষেত্রে শসা বীজ ৭। ৮ গ্রাম বেটে, জলে গুলে, ছেকে, সরবতের মত প্রত্যহ একবার করে খেতে হবে।
৬. কামোত্তেজনায়: এমন একটা বয়েস আসে, যে সময়টায় এই স্বভাব প্রবৃত্তি অনেককেই ব্যতিব্যস্ত করে, যার ফলে তিনি নিজেকে সামলাতে পারেন না, যার জন্য ক্ষয় করতে বাধ্য হন, যার ফলে সকালের দিকে ঝিমনী, আলস্য এসেই যায়। এইভাবে চলতে চলতে এমন একটা বয়েস আসে, যে বয়েসে তাঁর প্রয়োজন, সে সময় তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। এরা এই অসুবিধে থেকে যদি নিজেকে রক্ষে করতে চান, তাঁরা শসার বীজ ৭। ৮ গ্রাম বেটে সরবত করে খাবেন, তাহ’লে এ অসুবিধে আর হবে না।
CHEMICAL COMPOSITION
Cucumis sativa Linn.
Analysis of fruits :– Moisture 96%; protein 0.4%; fat 0.1%; carbohydrates 2.8%; mineral matter 0.3%; vitamins (vitamin B-1 and ascorbic acid); proteolytic enzymes; succinic and malic acid. Analysis of seed kernels:- Crude protein 42%; fat 42.5%; ash (rich in phosphates 0.62%); soluble fatty acids (butyric acid) 0.4%: and unsaponin matter 0.91%.
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৫, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ ১৪০৩, পৃষ্ঠা, ১৫৪-১৫৫।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।