লাচ্ছি নদী বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার একটি নদী

লাচ্ছি নদী (ইংরেজি: Lacchi River) হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার, প্রস্থ ১০ মিটার, গভীরতা ২.৫ মিটার এবং অববাহিকা এলাকার পরিমাণ ৫০ বর্গ কিমি। নদীটিতে জোয়ার ভাঁটার প্রভাব থাকে না। লাচ্ছি নদী মূলত টাঙ্গন নদীর উপনদী যা টাঙ্গনের ডান তীরে এসে মিলিত হয়েছে।[১]

প্রবাহ: লাচ্ছি নদী বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভোমরাদহ ইউনিয়নের মহব্বতপুর বিল থেকে উৎপন্ন হয়েছে। কিছুদুর অগ্রসর হয়ে নদীটি জনগাঁও বিল এবং কাচনা বিল থেকে পানি সংগ্রহ করে আরো দক্ষিণে এগিয়ে যায়। নদীটি একই উপজেলার টাঙ্গন নদীতে পতিত হয়েছে।

লাচ্ছি নদী একটি মৌসুমি নদী, মার্চ ও এপ্রিল শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ থাকে না কিন্তু আগস্ট বর্ষাকালে পানির পরিমাণ ২ কিউসেক ও গভীরতা ২.৫০ মিটারে উন্নীত হয়। জোয়ার-ভাটার প্রভাব এ নদীতে পরিলক্ষিত হয় না এবং সাধারণ বন্যায় নদীর পাড় পানি উপচায় না। পীরগঞ্জ পৌরসভা এ নদীর তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জনপদ এবং পীরগঞ্জস্থ ১টি সেতু এ নদীর উপর নির্মিত হয়েছে।

২০১৮ সালের থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে লাচ্ছি নদীতে খননকাজ পরিচালনা করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। লাচ্ছি নদী খনন করার ফলে পানি প্রবাহ ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক জেলে এবং সৌখিন মাছ শিকারি রাতে, সকালে ও বিকেলে লাচ্ছি নদীতে মাছ ধরে, বাজারে বিক্রি করে সাময়িক সফলতা পাচ্ছে। এছাড়া নদীর পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করার পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষা, শোভা বর্ধন, নদীর দুপারে বৃক্ষরোপণ হওয়ায় নদীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়ে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অনেক ভ্রমণ ও বিনোদনপ্রিয় মানুষ মনের প্রশান্তি ও আনন্দের জন্যে নদীর ধারে বেড়াতে আসেন।

আলোকচিত্রের ইতিহাস: পীরগঞ্জ পৌরসভা থেকে লাচ্ছি নদীটির এই আলোকচিত্রটি তুলেছেন সানজিদ হোসেন নামের এক আলোকচিত্রী নভেম্বর ২০১০ তারিখে।

আরো পড়ুন:  নাগর নদী বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আন্তঃসীমান্ত নদী

তথ্যসূত্র

১. হানিফ শেখ, ড. মো. আবু (ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। “উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নদ-নদী”। বাংলাদেশের নদ-নদী ও নদী তীরবর্তী জনপদ (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অবসর প্রকাশনা সংস্থা। পৃষ্ঠা ৫৫। আইএসবিএন 978-9848797518।

Leave a Comment

error: Content is protected !!