দেশি জাগরা দক্ষিণ এশিয়ার ভেষজ বৃক্ষ

দেশি জাগরা

বৈজ্ঞানিক নাম: Macaranga indica Wight, Ic. Pl. Ind. বি Or. 5, 2: t. 1883 (1852). সমনাম Macaranga flexuosa Wight (1852).  ইংরেজি নাম : Indian Macaranga. স্থানীয় নাম : দেশি জাগরা।  
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Malpighiales. পরিবার: Euphorbiaceae. গণ: Macaranga প্রজাতির নাম: Macaranga indica

ভূমিকা: দেশি জাগরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Macaranga indica) হচ্ছে  এক প্রকারের ভেষজ বৃক্ষ। এই প্রজাতিটি এশিয়ার দেশে জন্মায়।

দেশি জাগরা -এর বর্ণনা :

মাঝারি আকারের বৃক্ষ, প্রায় ২০ মিটার উঁচু, ছোট শাখা রোমশ বিহীন, শক্ত বা তরুণ অংশ মরচে ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত। পত্র ডিম্বাকৃতি গোলাকার, ১০-৩০ × ৭- প্রত ২২ সেমি, উপপত্র ১৩ × ৫ মিমি, ভল্লাকার-ডিম্বাকার, আশুপাতী, বৃন্ত ৭-২০ সেমি লম্বা, পত্রশীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র, পাদদেশ গোলাকার, করতলাকার শিরাল, পার্শ্বীয় শিরা ৬- ৮ জোড়া।

পুংমঞ্জরী প্রায় ১২ সেমি লম্বা, মঞ্জরী অক্ষ নিচের দিকে রোমশ বিহীন, উপরের অংশ মরচে রোমশ, প্রচুর শাখায়িত। পুংপুষ্প অবৃন্তক, মঞ্জরীঅক্ষে গুচ্ছবদ্ধ, মঞ্জুরীপত্র যুক্ত, পুংকেশর ৩-৮টি। স্ত্রীমঞ্জরী পুংমঞ্জরী অপেক্ষা দীর্ঘ ও ঘন, মঞ্জরীশাখা প্রায় ১৩ সেমি। স্ত্রীপুষ্প সবৃন্তক, বৃন্ত ৪-৭ মিমি লম্বা, ২ মিমি রৈখিক মঞ্জরীপত্র যুক্ত, বৃতি খন্ড ৪টি, ১ × ১ মিমি, প্রশস্ত ডিম্বাকার, স্থূলাগ্র, গর্ভাশয় ২.৫ মিমি ব্যাসযুক্ত, অনুদৈর্ঘ্য চাপা গোলাকার, সাধারণত ২-কোষী, গর্ভদন্ড ২টি, সূত্রাকার। ফল গোলাকার, ৩ ০ ৬ মিমি। বীজ গোলাকার, আড়াআড়ি ৩ মিমি, ফ্যাকাশে বাদামী।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Mehra and Hans, 1969).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

অরণ্যে জন্মায়। ফুল ও ফল ধারণ সময় এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাস। বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি :

ভুটান, চীন, ভারত, মায়ানমার ও শ্রীলংকা। বাংলাদেশের সিলেট জেলায় পাওয়া যায় (Alam, 1988)।

ব্যবহার: উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত গদ ঘা সারাতে ব্যবহার করা হয় (Cains, 1998)।

আরো পড়ুন:  মঞ্জিটা বা মজাঠি গাছের এগারোটি ভেষজ গুণাগুণ ও প্রয়োগ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৭মখণ্ডে (আগস্ট ২০১০) দেশি জাগরা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাস্থল ধ্বংসের কারনে বাংলাদেশে এটি হুমকির সম্মুখীন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে দেশি জাগরা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির অনুসন্ধানের মাধ্যমে অবস্থান নির্দেশ জরুরি। খুঁজে পাওয়া সম্ভব হলে যথাস্থানে সংরক্ষণ প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৭ম, পৃষ্ঠা ৪৬৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dolon Prova

Leave a Comment

error: Content is protected !!