বড় লতা ঢেকিয়া দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো ফার্ন

বড় লতা ঢেকিয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Lygodium giganteum Tagawa et Iwatsuki in Acta Phytotax, Geobot. 22(3): 97, f.1 (1967). সমনাম জানা নেই. ইংরেজি নাম : ক্লাইম্বিং ফার্ন। স্থানীয় নাম : বড় লতা ঢেকিয়া।  
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Polypodiophyta. অবিন্যাসিত: Polypodiopsida. বর্গ: Schizaeales. পরিবার: Lygodiaceae. গণ: Lygodium প্রজাতির নাম: Lygodium giganteum

ভূমিকা: বড় লতা ঢেকিয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Lygodium giganteum) হচ্ছে  এক প্রকারের ভেষজ বিরুৎ। এই প্রজাতিটি এশিয়ার দেশে জন্মায়।

বড় লতা ঢেকিয়া- এর বর্ণনা:

একটি পাকানো ফার্ন। গ্রন্থিকন্দ স্বল্প-লতানো। পাতা ২.৫-৪.৫ সেমি লম্বা, ৩০-৫০ সেমি চওড়া, পত্রকঅক্ষ আড়াআড়ি ১.৫-২.৫ মিমি, পৃষ্ঠীয় তল রোমশ, পত্রকের প্রতি অর্ধেক ১৮-২০ সেমি লম্বা, ১৫-২০ সেমি চওড়া, ত্রিকোণাকার, ত্রি-পক্ষল। প্রধান পত্রকঅক্ষ শাখা ৫- ৮ সেমি লম্বা, সুস্পষ্ট, প্রধান পত্রকঅক্ষের মত, সুপ্ত শীর্ষ ১.০-১.৫ মিমি, বাদামী পর্দাযুক্ত, সূঁচালো রোমযুক্ত, গৌণ পত্রক অক্ষ-শাখা ৮-১৫ সেমি লম্বা, শক্ত, দূরে যুক্ত, গৌণ পত্রক-অক্ষ সন্ধিল অথবা গ্রন্থিল, পক্ষল অথবা দ্বি-পক্ষল, পক্ষক ৬-১০ সেমি লম্বা, ৩-৮ সেমি চওড়া, গোড়ায় সবচাইতে বড়, উপরের দিকে ক্রমাগত ছোট, সব বৃন্তযুক্ত, শীর্ষের দিকে বৃন্তহীন হতে পারে, অগ্রস্থটি সরল অথবা দ্বি- বিভক্ত, ভোঁতা। গোড়ার পক্ষক খন্ডযুক্ত অথবা গোড়ায় সংযুক্ত, বৃন্ত ৪-১৬ মিমি লম্বা, গৌণ পত্রকঅক্ষের সঙ্গে গ্রথিত, প্রতিটি সন্ধিস্থল স্ফীত এবং বৃন্তযুক্ত, কালচে-বাদামী, বাহ্যত Y-আকার এর। পক্ষক ৩-৮ সেমি লম্বা, গোড়ার পক্ষক এক বা দুইটি পার্শ্বীয় খন্ডসহ সুস্পষ্ট বৃত্তযুক্ত, খন্ড লগ্ন, তীর্যক, ভোঁতা, সভঙ্গ, মধ্যশিরা সুস্পষ্ট রোমশ, ১-৩ বার দ্বি-বিভক্ত, মাঝখানেও অল্প কিছু অত্যন্ত ছোট, প্রায় চর্মবৎ রোম বর্তমান। রেণুধর (sporophyll) ৩-৬ মিমি লম্বা। সোরাসগুলি প্রান্ত থেকে বহিঃবর্তিত, খন্ডে পরিণত। উর্বর পাতার প্রতিটি খন্ড দুই পার্শ্বীয় সারিতে নাসপাতি আকৃতির রেণুস্থলী ধারণকারী। স্পোর ত্রি-কেন্দ্রিকাযুক্ত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: n = ২৯, ৩০, ৫৮ এবং ৬০, ২n = ৫৬, ১১২, ১১৬ এবং ১২০ জেনেরিক সংখ্যা (Kramer, 1990)।

আরো পড়ুন:  আমজুর বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে জন্মানো ভেষজ বৃক্ষ

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০০-১৫০০ মিটার উচ্চতায় পাহাড়ের অরণ্যে ভেজা স্যাঁতসেঁতে স্থানে। বংশবিস্তার হয় গ্রন্থিকন্দ এবং রেণু দ্বারা।  

বিস্তৃতি:

ভারত (পূর্ব ভারত, আসাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম), মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীন (ইউনান প্রদেশ)। একটি দুর্লভ লতানো ফার্ন। বাংলাদেশে চট্টগ্রাম জেলা থেকে এই প্রজাতি সংগ্রহ করা হয়েছে (Uddin et al., 1998a)।

ব্যবহার: আরোহী পত্রদন্ড মাছ ধরার জাল এবং ঝুড়ি তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৫ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বড় লতা ঢেকিয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারনে বাংলাদেশে এটি প্রায় হুমকীর সম্মুখীন। বাংলাদেশে বড় লতা ঢেকিয়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে প্রজাতিটির অবস্থান খুঁজে বের করার জন্য জরিপ করা এবং স্বস্থানের বাইরে এবং স্বস্থানে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

তথ্যসূত্র:    

১. মমতাজ মহল মির্জা (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৬০-২৬১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!