ঢেঁড়সের পুষ্টিমান: ঢেঁড়সের প্রতি ১০০ গ্রামে আহারোপযোগী ভিটামিন-এ ১৬৭০ মাইক্রোগ্রাম এবং ক্যালসিয়াম আছে ১১৬ মিলিগ্রাম। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আমিষ ১.৮ গ্রাম, শর্করা ৮.৭ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, লৌহ ১.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ০.২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ১০ মিলিগ্রাম এবং খাদ্যশক্তি ও রয়েছে ৪৩ কিলোক্যালরি। মানবদেহে ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে যতই শক্তিদায়ক খাবার খাওয়া হোক না কেন, অসুস্থ অবধারিত। এজন্য ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঢেঁড়স খেতে পারেন।[১]
ভেষজ গুণ:
কচি ভেঁড়শ বেশি উপকারী। সংস্কৃত ভাষায় ঢেঁড়শকে বলা হয় ভিণ্ডিশ। ঢেঁড়শকে আয়ুর্বেদে রোমশ বলা হয় কারণ আয়ুর্বেদ মতে ঢেঁড়শের (Abelmoschus esculentus) গায়ে আছে রোমের মতে সাদা সাদা পাতলা কাঁটা। খেলে খাওয়ার রুচি বাড়ে, মল পরিষ্কার হয়, শরীর ঠাণ্ডা হয়, পিত্ত ও শ্লেষ্ম নাশ হয়, শরীরের পাথর বেরিয়ে যায়, প্রস্রাব পরিষ্কার হয় (মূত্রকর)। কিন্তু বেশি ঢেঁড়শ খেলে বাতের প্রকোপ হয় (বাতকর)। বহুমূত্র অথাৎ ডায়বেটিসের পক্ষে উপকারী। প্রস্রাবের অসুখ উপশম করে।[২]
ঢেঁড়শের তরকারি পুষ্টিদায়ক এবং শরীরের পক্ষে ভাল। কচি নরম ঢেঁড়শ খেলেই উপকার বেশি হয়। ঢেঁড়শের টাটকা নরম বীজ পিষে চিনি মিশিয়ে খেলে প্রস্রাবের অসুখে উপকার পাওয়া যায়। ঢেঁড়শ গাছের মূল বা শিকড় পিষে চিনি মিশিয়ে খেলে আমাশা রোগে উপকার হয়।
রোজ সকালে কয়েকটি টাটকা নরম ঢেঁড়শ কাঁচা খেলে শরীরে পুষ্টি লাভ হয়। ঢেঁড়শ রুচিবর্ধক, বীর্যবর্ধক এবং পৌষ্টিকতার গুণে ভরা। তবে যাঁদের কাশি হয়েছে যাঁরা কফ ও বায়ুরোগে ভুগছেন তাঁদের পক্ষে ঢেঁড়শ খাওয়া ভাল নয়।
বৈজ্ঞানিক মতে, ঢেঁড়শে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, গন্ধক, সোডিয়াম, লোহা, তামা এবং ভিটামিন এ ও সি আছে।
ঢেঁডশকে ইংরিজিতে বলা হয় লেডিজ ফিঙ্গার। দেখতে ফিঙ্গারের (আঙুলের) মতো হোক বা না হোক ঢেঁড়শ ভাতে, ঢেড়শ ভাজা, হিং পাঁচফোড়ন, লেবুর রস দিয়ে ও চিনি দিয়ে টক মিষ্টি ঢেড়শের তরকারি খেতে কার না ভাল লাগে।[২]
তথ্যসূত্রঃ
১. নাহিদ বিন রফিক, শাকসবজির পুষ্টি ও ভেষজগুণ, তারিখহীন, কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস), http://www.ais.gov.bd/site/view/krishi_kotha_details/১৪২৪/অগ্রহায়ণ/শাকসবজির পুষ্টি ও ভেষজগুণ
২. সাধনা মুখোপাধ্যায়: সুস্থ থাকতে খাওয়া দাওয়ায় শাকসবজি মশলাপাতি, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, নতুন সংস্করণ ২০০৯-২০১০, পৃষ্ঠা,১০০-১০২।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে”, “ফুলকির জন্য অপেক্ষা”। যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ” এবং যুগ্মভাবে রচিত বই “নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।