বাংলাদেশের চলনবিল অঞ্চলে পাখি শিকার ও নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থানে সুকৌশলে পাখি বিক্রির কাজে লিপ্ত মতিয়ার রহমান স্বপন। বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, রাজশাহী এর কর্মীরা প্রায় তিনমাসের চেষ্টায় তাকে ২০ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তার ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। উল্লেখ্য ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বন্য পাখিসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী শিকার, ধরা, মারা, বিক্রি এবং পাচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
বন্য পাখি শিকার বিষয়ে পাখি ও বন্য প্রাণি বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান বলেছেন ‘যাতে অন্য শিকারিরা পাখি শিকার করতে ভয় পায় সেজন্য এ-ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।’ রাজশাহীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্লা রেজাউল করিম তার ফেসবুকে এই তথ্য জানান। এছাড়াও তিনি লিখেছেন, ‘যার কাছে পাখি পাওয়া যাবে তাকে ধরতে হবে। এছাড়াও মনিটরিং বৃদ্ধি করা দরকার। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
এক সময় রাজশাহী জেলার নাটোর মহকুমার তিন-চতুর্থাংশ, নওগাঁ মহকুমার রানীনগর ও আত্রাই থানা, পাবনা জেলার চাটমোহর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, বেড়া থানা, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ ও তাড়াশ থানা ও বগুড়া জেলার শেরপুর, নন্দীগ্রাম এলাকার বেশ কিছু এলাকা জুড়ে গঠিত চলনবিল অতিথি পাখির অভয়ারন্য। নানা কারণে চলনবিলের জলসীমা সংকুচিত হওয়ায় অতিথি পাখিদের অবাধে নিরাপদে বিচরণক্ষেত্র এলাকাও কমে গেছে। অতীতের মতো চলনবিলে চলতি শীত মৌসুমে অতিথি পাখির আগমন উদ্বেগজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশের অভাব, অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশ কের ব্যাবহার, খাদ্যের অভাব, শৌখিন শিকারীর আগ্রাসনে চলনবিলাঞ্চলে শীত মৌসুমে অতিথি পাখির আগমনের হার ও উপস্থিতি অতীতের তুলনায় বর্তমানে কমে গেছে বহুগুণে। প্রবীণদের মতে জরুরিভাবে পাখি শিকারীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে একদিন এই চলন বিলে আর অতিথি পাখি দেখা যাবে না।