হরিদাস ভট্টাচার্য ছিলেন অবিভক্ত ভারতের দার্শনিক, অধ্যাপক ও বাগ্মী

হরিদাস ভট্টাচার্য (ইংরেজি:Haridas Bhattacharya; ৭ নভেম্বর ১৮৯১ – ২০ জানুয়ারি ১৯৫৬ খ্রি.) ছিলেন অবিভক্ত ভারতের একজন প্রখ্যাত দার্শনিক, অধ্যাপক ও বাগ্মী। তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে অধ্যাপনা শুরু করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের প্রথম দিকে অধ্যাপনাকালে হরিদাস ভট্টাচার্য প্রখ্যাত ভারতীয় দার্শনিক আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শীলের প্রশংসাধন্য একজন তরুণ সহকর্মী ছিলেন। পরবর্তীকালে ১৯২১ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তার গোড়াতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখার্জীর সঙ্গে আলাপক্রমে সংগৃহীত বিশিষ্ট অধ্যাপকদের একজন ছিলেন তরুণ অধ্যাপক হরিদাস ভট্টাচার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগকে সংগঠিত করার দায়িত্ব নিয়ে হরিদাস ভট্টাচার্য ‘রিডার’ হিসাবে ১৯২১ সনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৪৫ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় গমন করেন। হরিদাস ভট্টাচার্য বিশেষ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন অধ্যাপক ছিলেন। বাংলা এবং ইংরেজী উভয় ভাষায় দক্ষ এবং ওজম্বিনী রীতিকে বক্তৃতাদানের তিনি ক্ষমতা রাখতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষাপ্রাপ্ত এবং পরবর্তীতে খ্যাতিমান বহু প্রখ্যাত দার্শনিক এবং সাহিত্যিক তাঁর সাক্ষাৎ ছাত্র ছিলেন।

হরিদাস ভট্টাচার্য নিজে পরিবারগতভাবে নদীয়ার গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান ছিলেন। প্রথিতযশা দার্শনিক হলেও নিজের পৈতৃক ধর্মের সকল আচার-অনুষ্ঠান নিষ্ঠার সঙ্গে বিশ্বাস ও পালন করতেন। কিন্তু সংকীর্ণমনা ছিলেন না। ভারতের বিখ্যাত শিক্ষাবিদ হুমায়ুন কবির তাঁর গুণমুগ্ধ ছিলেন। ধর্মের ক্ষেত্রে তাঁর উদার দার্শনিক মনোভাবের পরিচয় বহন করে তাঁর বিশিষ্ট গবেষণা গ্রন্থ ‘ফাউণ্ডেশনস অব লিভিং ফেইথস’ বা ‘প্রচলিত ধর্মসমূহের ভিত্তি’। এই গ্রন্থের মধ্যে ইসলাম ধর্মের দর্শন এবং তার অন্তর্গত সমস্যাসমূহ সম্পর্কেও তাঁর গভীর জ্ঞানের প্রকাশ ঘটেছে।

তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ১৮৯।

Leave a Comment

error: Content is protected !!