ফিরে যা প্রণব, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের দাবি

বাংলাদেশের রাজনীতি ও সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপকারী ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী-এর বাংলাদেশে আগমন ও বিপ্লবী সূর্যসেন-প্রীতিলতার জন্মভূমিতে সফরের প্রতিবাদে আজ ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮ জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল চট্টগ্রামে এক প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে। মুক্তি কাউন্সিল পূর্ব-৩ সদস্য সচিব এডভোকেট আমীর আব্বাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলার নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জনার্দন দে, জেলা সচিব সামিউল আলম রিচি।

বক্তারা বলেন, বিপ্লবী সূর্যসেন-প্রীতিলতার জন্মভূমি এই চট্টগ্রামে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপকারী প্রণব মুখার্জীর আগমন এই দেশের মুক্তিকামী জনগণের সংগ্রামের প্রতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি চরম অবমাননাকর! সম্প্রতি প্রকাশিত দি কোয়ালিশন ইয়ার্স বইতে প্রণব মুখার্জী যেভাবে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের বিবরণ দিয়েছেন সেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সেই বইতে প্রণব মুখার্জী লিখেছেন কিভাবে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রণব মুখার্জী বাংলাদেশে তথাকথিত স্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রত্যাবর্তন করেছিলেন! লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাকিস্তানী শাসকশ্রেণীর হাত থেকে মুক্ত করে যে বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছি সেই বাংলাদেশ কি তাহলে এইভাবেই ভারতের নির্দেশে চলবে? সেই ভারত রাষ্ট্রের প্রতিনিধি প্রণব মুখার্জীকে এখন ডিলিট ডিগ্রী দিতে হবে? এই ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অপমান!

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রণব মুখার্জীর বইয়ে এটি নগ্নভাবে পরিস্কার হয়ে গেছে যে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি-রাজনীতি-নির্বাচনী ব্যবস্থা এমনকি সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীগুলোও ভারতের পররাষ্ট্র নীতির অধীনস্থ হয়েই চলছে। ২০১০ সালে হাসিনা-মনমোহন চুক্তির মধ্যে দিয়ে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন প্রকাশ্যে এই ঘৃণ্য হস্তক্ষেপের কথা ঘোষণা করতেও এরা পরোয়া করেনা। প্রণব মুখার্জীকে ডিলিট প্রদানের মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর হস্তক্ষেপকারী, ভারতের সাধারণ জনগণের উপর নির্যাতনকারী শাসকশ্রেণীর একজন প্রতিনিধিকে সম্মানিত করতে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ এবং ৭১ এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, নির্যাতিত নারীদের সংগ্রাম এবং সর্বোপরি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতি চরম অপমান! ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের শহীদ মাস্টারটা সূর্যসেনের জন্মস্থানে তাকে সফর করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! এটি চট্টগ্রামের সন্তান মুক্তিকামী বিপ্লবী সূর্যসেনের প্রতি অপমান! শুধু তাই নয় এই মোসাহেবরা প্রণব মুখার্জীর হাতে শহরের স্মারক চাবি তুলে দিতে যাচ্ছে! এই অবমাননার জন্যই কি মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিল?

আরো পড়ুন:  বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা পাঠের আসর শুক্রবার


নেতৃবৃন্দ প্রণব মুখার্জীর চট্টগ্রামে আগমন , বিপ্লবী সুর্যসেনের স্মৃতিবিজরিত স্থান পরিদর্শন সহ তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিলিট ডিগ্রী প্রদানের প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Comment

error: Content is protected !!