শ্যামল গুপ্ত বাঙালি আধুনিক বাংলা রোমান্টিক গানের গীতিকার

শ্যামল গুপ্ত (৩ ডিসেম্বর ১৯২২ – ২৮ জুলাই ২০১০) আধুনিক বাংলা রোমান্টিক গানের গীতিকার। তার জন্ম ১৯২২ সালের ৩ ডিসেম্বর কলকাতায়। পৈতৃক আবাস ছিল বিহারের জামালপুরে। বাস্তুভিটা অবশ্য ২৪ পরগনার হালিশহরে। পিতামহ ও পিতা মুঙ্গের হাইকোর্টের ব্যবহারজীবী ছিলেন।

শ্যামল গুপ্তর বিদ্যাশিক্ষা স্কটিশ চার্চ স্কুল ও কলেজ। রসায়ন শাস্ত্রে সাম্মানিক স্নাতক হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে। পুণার মিলিটারি এক্সপ্লোসিভ ল্যাবরেটারিতে রসায়নাগরিক হিসাবে কর্ম করেন। ১৯৪৭ সালে সে কাজে ইস্তফা দিয়ে। কলকাতা প্রত্যাবর্তন ও এক বছর বিজ্ঞাপনের কপি লেখার কাজ। তারপরে পুরোদস্তুর লেখার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

সংগীতের ক্ষেত্রে প্রথম আবির্ভাব গায়ক হিসাবে। ১৯৪৬-৪৭ সালে গ্রামোফোন কোম্পানিতে তিনটি রেকর্ড করেন। তারপরে গান গাওয়া ছেড়ে গান লেখার সূচনা। সেই সঙ্গে চলে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা। লেখেন দুখানি চিত্রকাহিনীও, ‘বধূবরণ’ ও ‘পুতুল ঘর’। তারাপদ চক্রবর্তীর শিষ্য মণি ঘোষের কাছে মার্গ সংগীতের প্রাথমিক পাঠ নেন। গান রচনায় প্রেরণারূপে কাজ করে ছাত্রজীবনে পড়া রবীন্দ্রনাথের ‘শেষসপ্তক’ কাব্যের কবিতাগুচ্ছ। কবিতা লিখেছেন ‘অরণি’, ‘অভ্যুদয়’, ‘একক’ পত্রিকায়। ছোট গল্প লিখেছেন ‘বসুমতী’ ও ‘সত্যযুগ’ পত্রিকায়।

তাঁর রচিত গানের সংখ্যা প্রায় দু হাজার। তার মধ্যে চলচ্চিত্রের জন্য লেখা আড়াইশো-তিনশো গান। প্রকাশিত গীত-সংকলন ‘আধুনিক গান’ (১৯৬৩)। ‘হারমোনিয়াম’ চলচ্চিত্রের গান লেখার জন্য পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া পুরস্কার। এ ছাড়াও অনেক পারিতোষিক পেয়েছেন গান লিখে। প্রখ্যাত গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় শ্যামল গুপ্তের পত্নী।

তথ্যসূত্র:

১. সুধীর চক্রবর্তী সম্পাদিত আধুনিক বাংলা গান, প্যাপিরাস, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৯৪, পৃষ্ঠা, ১৮০-১৮১।

Leave a Comment

error: Content is protected !!