তালিপট পাম পৃথিবীর বৃহত্তম পামের অন্যতম

পাম

তালিপট পাম

বৈজ্ঞানিক নাম: Corypha umbraculifera L., Sp. Pl.: 1187 (1753). সমনাম: Bessia sanguinolenta Raf, Corypha guineensis L. ইংরেজি নাম: টেলিপট পাম। স্থানীয় নাম: তালিপত পাম । জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Monocots অবিন্যাসিত: Commelinids বর্গ: Arecales পরিবার: Arecaceae গণ: Corypha প্রজাতির নাম: Corypha umbraculifera

ভূমিকা: তালিপট পাম বা তালিপত পাম (বৈজ্ঞানিক নাম: Corypha umbraculifera ইংরেজি নাম: talipot palm) হচ্ছে এরিকাসি পরিবারের কোরিফা গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রজাতি।  অফিস, বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয়ে থাকে।

বর্ণনা: তালিপট পাম লম্বা, ঋজু, দৃঢ়, অমসৃণ পাম, ১৮ থেকে ২৪ মিটার উঁচু। ৪০ বছর পর ফুল ধরে। ফুল ও ফল ধরার পর গাছটি মারা যায়। কান্ড অস্পষ্ট সর্পিলাকার খাঁজ যুক্ত। পাতা পাখা সদৃশ বহুখন্ডিত, বৃন্ত কন্টকিত।

পুষ্পবিন্যাস সুস্পষ্ট পিরামিডাকৃতির যৌগ চমসা মঞ্জরী, অতিশয় বৃহৎ, ৬ থেকে ৮ মিটার লম্বা, শীর্ষীয়, চমসা অনেক, নলাকার, পুষ্প ক্ষুদ্র, উভলিঙ্গ, বৃত্যংশ যুক্ত হয়ে পেয়ালাকৃতির ৩ খন্ড বৃতিতে পরিণত, পাপড়ি ৩ টি, নিম্নাংশ যুক্ত, ডিম্বাকার, সূক্ষ্মাগ্র, প্রান্ত আচ্ছাদী বা অর্ধ-প্রান্ত স্পর্শী।

পুংকেশর ৬ টি, পুংদন্ড  সুঁচ্যাকার, পরাগধানী পৃষ্ঠলগ্ন, গর্ভপত্র ৩ টি, যুক্ত গর্ভাশয় ৩ খন্ডক এবং ৩ কোষী, ডিম্বক মূলীয়, ঋজু, গর্ভদন্ড খাটো, উঁচ্যাকার, গর্ভমুণ্ড ক্ষুদ্র।

ফল প্রতি শাখায় ১ থেকে ৩ টি শাঁসালো ডুপ, গোলাকার, ৩ থেকে ৪ সেমি ব্যাস যুক্ত, হলুদাভ-সবুজ, মূলীয় গর্ভদন্ড যুক্ত। বীজ ঋজু গোলাকার বা দীর্ঘায়ত, সস্য সুসম, ভ্রুণ সর্পিলাকার। তালিপত পাম পৃথিবীর বৃহত্তম পামের অন্যতম এবং  সর্ববৃহৎ পুষ্পবিন্যাস ধারী পুষ্পের সংখ্যা লক্ষাধিক।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩৬ (Fedorov, 1969)।

চাষাবাদ:  উপকূলবর্তী অঞ্চল, সাধারণত বাগানে চাষাবাদ করা হয়। বীজ দ্বারা এই পামের বংশ বিস্তার।

বিস্তৃতি: আদি নিবাস দক্ষিণ ভারত (মালাবার উপকূল) ও শ্রীলংকা। এশিয়ার দক্ষিনাঞ্চল চীনের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে চাষাবাদ করা হয়। বাংলাদেশে ঢাকার বলধা গার্ডেনে এই গাছটি দেখা যায়।

আরো পড়ুন:  নারকেলের সতেরোটি ভেষজ গুণ, ব্যবহার ও উপকারিতা

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: পাতা ঘরের ছাউনি রূপে ব্যবহৃত এবং আংশিক কর্তৃত মঞ্জরীদন্ড থেকে সংগৃহীত রস দ্বারা পাম ওয়াইন তৈরি করা হয়। জাতিতাত্বিক ব্যবহার হিসেবে দেখা যায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এর পাতায় লেখার কাজ চলত।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০)   তালিপত পাম প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের সংকটের কারণ দেখা হয়েছে ফুল ফোটার আগেই পরিণত গাছ কেটে ফেলা হয়। বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত না হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে তালিপত পাম সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরির মাধ্যমে চাষাবাদ জরুরি। বাগানে ও বাসা বাড়িতে অধিক আবাদের উৎসাহ করা যেতে পারে।[১]

তথ্যসূত্র:

১. এম. জসিম উদ্দিন (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১৯-১২০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj

Leave a Comment

error: Content is protected !!